অসুখ
আবুল হাসান | কাব্য - পৃথক পালঙ্ক
অসুখ আমার অমৃতের একগুচ্ছ অহঙ্কার!
আত্মার অন্ধকারে লুকিয়ে থাকা ক্ষুধিত জানোয়ারের
রোমশ বলশালী শরীরের দুটি সূর্যসমান রক্তচক্ষু!
যা দেখে ঈশ্বর পর্যন্ত ভয়ে, ভয়াল হিমে শয্যাদায়গ্রস্ত হন!
হা সুখী মানুষ, তোমরাই শুধু জানলেনা
অসুখ কত ভালো কত চিরহরিৎ বৃক্ষের মতো শ্যামল
কত পরোপকারী, কত সুন্দর!
একবার রুগ্নতায় প্রবেশ করলে স্বর্গ না হোক
নরকের ভিতরের চরকীবাজি আর হল্লা আর অলঙ্কুশ
নারী নৃত্যে তো দেখে আসা যায়!
যুবতীর স্তনের ভিতরে লাবণ্যের লোহা টলটল করে–
তার চেয়ে হলুদগন্ধকের আর লোহার তপ্ত দ্রবণজাত জ্বালা
বুকের কোষে কোষে আমারও শিরা উপশিরার এক গুচ্ছ
অন্ধকারের মতো জমে আছে।
সমস্ত শরীরে আমার এখন একক প্রদাহের অমৃতনিঃসন্ধী অনল উদ্যান!
তাই ভিতরে ভিতরে… মাথার ভিতর অমৃত্যের বদলে যা প্রবাহিত…
তা অনুর্বরা জমির জ্বলনসেচ প্রদাহ, তা জ্বরের জিয়ল আঠার জ্বালা।
বেঁচে থাকতে হলে তবু মাঝে মাঝে জ্বরের, জ্বরের প্রদাহ চাই :
চাই আবার জোয়ারের মতো সাতিশয় কুলু কুলু শুশ্রূষা!
চাই আবার জোয়ারের মতো সাতিশয় কুলু কুলু শুশ্রূষা!
আমার অসুখ যেনো হঠাৎ আবার তন্দুরের রাশি রাশি রুটির
ক্ষুধার্ত উত্থান!
তখোন সমস্ত শরীর হয়ে যায় একটি বিশাল রুটি–অগ্নি ঝলোমলো,
আর তাকে ছিঁড়ে খাবলে খেতে আসে হাজার হাজার বন্যাপ্লাবিত
দুদৈর্বের দেশের মানুষ!
ভয়ে নিজের ভিতর নাগ কেশরের ডগার মতো
হৃৎপিণ্ডে সেঁধিয়ে যাই।
বিষের অতলে ঝিনুকের বিল্লী খুলে ঐ আত্মরক্ষাই
আমার অসুখ, আমার অহঙ্কার।
তবু অনাহারে মারীতে মৃত্যুতে আমি মরবোনা, না মরবোনা।
আসুর উচ্চে তুলে ধরে উষ্ণ স্রোতের ভিতর
আমার অনুপস্থিতি ডুবিয়ে বলছি :
জাপানের চেরীফুলের দোহাই :
দুদৈর্বের দেশে যেনো আমার মৃত্যু নিবারণ হয়!
সূর্যের রৌদ্রে চাবুক বানিয়ে আমি মৃত্যুকে সাবধান করে দেই!
অসুখে কে আবার কার পদানত?
এর আগে ফুলের ভিতরে মরেছি পাপড়ির মতো, পোকার মতো
সৌরভের মতো!
ঘাসের ভিতর মরে গেছি সবুজ রং এর মতে বিকেল বেলার বিলোল
আলোয়!
পাকা আতাফলের মতো মরে গেছি ঘোর ঋতু শেষের জামদানীর দিনে!
টাকার মতো মরে গেছি টাকশালের নকল ছাঁচে, কালোবাজারীর কালো
তেলোয়!
তেমন মরবোনা আর, অসুখকে চাই সুখের অমরাবতী!
হায় সুখী মানুষ বুঝলেন অসুখ কত ভালো :
আমি অসুখে যেতে যেতে এক চক্কর তোমাদের নরকে
সব সুখী মানুষদের দেখে এলাম–এটাই বা কম কি!
আত্মার অন্ধকারে লুকিয়ে থাকা ক্ষুধিত জানোয়ারের
রোমশ বলশালী শরীরের দুটি সূর্যসমান রক্তচক্ষু!
যা দেখে ঈশ্বর পর্যন্ত ভয়ে, ভয়াল হিমে শয্যাদায়গ্রস্ত হন!
হা সুখী মানুষ, তোমরাই শুধু জানলেনা
অসুখ কত ভালো কত চিরহরিৎ বৃক্ষের মতো শ্যামল
কত পরোপকারী, কত সুন্দর!
একবার রুগ্নতায় প্রবেশ করলে স্বর্গ না হোক
নরকের ভিতরের চরকীবাজি আর হল্লা আর অলঙ্কুশ
নারী নৃত্যে তো দেখে আসা যায়!
যুবতীর স্তনের ভিতরে লাবণ্যের লোহা টলটল করে–
তার চেয়ে হলুদগন্ধকের আর লোহার তপ্ত দ্রবণজাত জ্বালা
বুকের কোষে কোষে আমারও শিরা উপশিরার এক গুচ্ছ
অন্ধকারের মতো জমে আছে।
সমস্ত শরীরে আমার এখন একক প্রদাহের অমৃতনিঃসন্ধী অনল উদ্যান!
তাই ভিতরে ভিতরে… মাথার ভিতর অমৃত্যের বদলে যা প্রবাহিত…
তা অনুর্বরা জমির জ্বলনসেচ প্রদাহ, তা জ্বরের জিয়ল আঠার জ্বালা।
বেঁচে থাকতে হলে তবু মাঝে মাঝে জ্বরের, জ্বরের প্রদাহ চাই :
চাই আবার জোয়ারের মতো সাতিশয় কুলু কুলু শুশ্রূষা!
চাই আবার জোয়ারের মতো সাতিশয় কুলু কুলু শুশ্রূষা!
আমার অসুখ যেনো হঠাৎ আবার তন্দুরের রাশি রাশি রুটির
ক্ষুধার্ত উত্থান!
তখোন সমস্ত শরীর হয়ে যায় একটি বিশাল রুটি–অগ্নি ঝলোমলো,
আর তাকে ছিঁড়ে খাবলে খেতে আসে হাজার হাজার বন্যাপ্লাবিত
দুদৈর্বের দেশের মানুষ!
ভয়ে নিজের ভিতর নাগ কেশরের ডগার মতো
হৃৎপিণ্ডে সেঁধিয়ে যাই।
বিষের অতলে ঝিনুকের বিল্লী খুলে ঐ আত্মরক্ষাই
আমার অসুখ, আমার অহঙ্কার।
তবু অনাহারে মারীতে মৃত্যুতে আমি মরবোনা, না মরবোনা।
আসুর উচ্চে তুলে ধরে উষ্ণ স্রোতের ভিতর
আমার অনুপস্থিতি ডুবিয়ে বলছি :
জাপানের চেরীফুলের দোহাই :
দুদৈর্বের দেশে যেনো আমার মৃত্যু নিবারণ হয়!
সূর্যের রৌদ্রে চাবুক বানিয়ে আমি মৃত্যুকে সাবধান করে দেই!
অসুখে কে আবার কার পদানত?
এর আগে ফুলের ভিতরে মরেছি পাপড়ির মতো, পোকার মতো
সৌরভের মতো!
ঘাসের ভিতর মরে গেছি সবুজ রং এর মতে বিকেল বেলার বিলোল
আলোয়!
পাকা আতাফলের মতো মরে গেছি ঘোর ঋতু শেষের জামদানীর দিনে!
টাকার মতো মরে গেছি টাকশালের নকল ছাঁচে, কালোবাজারীর কালো
তেলোয়!
তেমন মরবোনা আর, অসুখকে চাই সুখের অমরাবতী!
হায় সুখী মানুষ বুঝলেন অসুখ কত ভালো :
আমি অসুখে যেতে যেতে এক চক্কর তোমাদের নরকে
সব সুখী মানুষদের দেখে এলাম–এটাই বা কম কি!
এখন পর্যন্ত কবিতাটি পড়া হয়েছে ১২২ বার
যদি কবিতাটা সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন