মাধবী এসেই বলে: ‘যাই’
রফিক আজাদ
খণ্ডিত ব্রিজের মতো নত মুখে তোমার প্রতিই
নীরবে দাঁড়িয়ে আছি আমার অন্ধতা ছাড়া আর
কিছুই পারি নি দিতে ভীষণ তোমার প্রয়োজনে;
উপেক্ষা করো না তবু, রানী—তোমার অনুপস্থিতি
করুণ বেদনাময়—বড় বেশি মারাত্মক বাজে
বুকের ভিতরে কী যে ক্রন্দনের মত্ত কলরোলে।
দালি-র দুঃস্বপ্নে তুমি, আর্তো-র উন্মাদ মনোভূমে,
সবুজ মৎস্যের মতো অবচেতনের অবতলে
রঙিন শ্যাওলা-ঝাড়ে সুজাতার মতো সরলতা।
মুহূর্তের নীলিমায় তরুণ ধ্যানীর মনে হয়
তুমি হও ছলাকলাহীন, রূপশালী ধান-ভানা
জীবনানন্দের মনোবাঙলার এক শাদাসিধে
নেহাৎ রূপসী। তবু কেন প্রাণপাত পরিশ্রমে
তোমাকে যায় না পাওয়া?—তুমি নেই মস্তিষ্কে, হৃদয়ে।
কখনো জ্যুরিখে তুমি, কিয়োটোতে, বাম-তীরে,
গ্রীনিচ পল্লীতে কিংবা রোমে পড়ে থাকো; কখনোবা
যোগ দাও পোর্ট-সৈয়দের নোংরা বেলাল্লাপনায়।
তোমার স্বভাব নয় স্থিরতায়—অস্থির, অধীর
তুমি আছ অনুভবে, তুমি আছ শিশুর স্বভাবে।
ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে পরিশ্রমে গড়ে-ওঠা রম্য-
অট্টালিকা, স্বভাবের ডালপালা—বিশ্ব-চরাচর।
যেনবা কোথাও গর্জে ওঠে ভয়াবহ অগ্নিগিরি
সোনালি লাভার স্রোতে ভরে দিল গ্রাম ও নগর।
যেন গর্ভগৃহ থেকে নেমে ডিনামাইটের মতো
অসম্ভব তোলপাড় তুলে দিল একটি শৈশব।
অবিশ্বাস্য উষ্ণতায়, চাপে দ্রুত গলে যেতে থাকে
ঘড়ির ডায়াল আর তোমার নিটোল অবয়ব।
তুমি সেই লোকশ্রুত পুরাতন অবাস্তব পাখি,
সোনালি নিবিড় ডানা ঝাপটালে ঝরে পড়ে যার
চতুর্দিকে আনন্দ, টাকার থলি, ভীষণ সৌরভ!
রোমশ বালুকা-বেলা খেলা করে রৌদ্রদগ্ধ তটে
অস্তিত্বের দূরতম দ্বীপে এই দুঃসহ নির্জনে
কেবল তোমার জন্যে বসে আছি উন্মুখ আগ্রহে—
সুন্দর সাম্পানে চড়ে মাধবী এসেই বলে—‘যাই’।
নীরবে দাঁড়িয়ে আছি আমার অন্ধতা ছাড়া আর
কিছুই পারি নি দিতে ভীষণ তোমার প্রয়োজনে;
উপেক্ষা করো না তবু, রানী—তোমার অনুপস্থিতি
করুণ বেদনাময়—বড় বেশি মারাত্মক বাজে
বুকের ভিতরে কী যে ক্রন্দনের মত্ত কলরোলে।
দালি-র দুঃস্বপ্নে তুমি, আর্তো-র উন্মাদ মনোভূমে,
সবুজ মৎস্যের মতো অবচেতনের অবতলে
রঙিন শ্যাওলা-ঝাড়ে সুজাতার মতো সরলতা।
মুহূর্তের নীলিমায় তরুণ ধ্যানীর মনে হয়
তুমি হও ছলাকলাহীন, রূপশালী ধান-ভানা
জীবনানন্দের মনোবাঙলার এক শাদাসিধে
নেহাৎ রূপসী। তবু কেন প্রাণপাত পরিশ্রমে
তোমাকে যায় না পাওয়া?—তুমি নেই মস্তিষ্কে, হৃদয়ে।
কখনো জ্যুরিখে তুমি, কিয়োটোতে, বাম-তীরে,
গ্রীনিচ পল্লীতে কিংবা রোমে পড়ে থাকো; কখনোবা
যোগ দাও পোর্ট-সৈয়দের নোংরা বেলাল্লাপনায়।
তোমার স্বভাব নয় স্থিরতায়—অস্থির, অধীর
তুমি আছ অনুভবে, তুমি আছ শিশুর স্বভাবে।
ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে পরিশ্রমে গড়ে-ওঠা রম্য-
অট্টালিকা, স্বভাবের ডালপালা—বিশ্ব-চরাচর।
যেনবা কোথাও গর্জে ওঠে ভয়াবহ অগ্নিগিরি
সোনালি লাভার স্রোতে ভরে দিল গ্রাম ও নগর।
যেন গর্ভগৃহ থেকে নেমে ডিনামাইটের মতো
অসম্ভব তোলপাড় তুলে দিল একটি শৈশব।
অবিশ্বাস্য উষ্ণতায়, চাপে দ্রুত গলে যেতে থাকে
ঘড়ির ডায়াল আর তোমার নিটোল অবয়ব।
তুমি সেই লোকশ্রুত পুরাতন অবাস্তব পাখি,
সোনালি নিবিড় ডানা ঝাপটালে ঝরে পড়ে যার
চতুর্দিকে আনন্দ, টাকার থলি, ভীষণ সৌরভ!
রোমশ বালুকা-বেলা খেলা করে রৌদ্রদগ্ধ তটে
অস্তিত্বের দূরতম দ্বীপে এই দুঃসহ নির্জনে
কেবল তোমার জন্যে বসে আছি উন্মুখ আগ্রহে—
সুন্দর সাম্পানে চড়ে মাধবী এসেই বলে—‘যাই’।
এখন পর্যন্ত কবিতাটি পড়া হয়েছে ১৪১ বার
যদি কবিতাটা সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন