আমার সময়
তসলিমা নাসরিন
সময় এভাবেই হতবুদ্ধির মতো দাঁড়িয়ে থাকবে আরো কয়েক বছর
সময় ঠিক এভাবেই দাঁড়িয়ে থাকবে ঠাঁয়
মুখ-মাথা ঢেকে, চোখ বুজে, পাথর চোখগুলো।
ধীরে ধীরে স্তব্ধতার গা ঘেসে দাঁড়াবে নৈঃশব্দ,
দৈর্ঘৈ আকাশ ছোবে, প্রস্থে দিগন্ত,
সময়ের সন্তান তারা; নিরাকার নির্বিকার উত্তরাধিকার।
কখনো আমার নিভৃত নিঃশ্বাসে বাসা বাঁধে পরাশ্রয়ী সময়,
কখনো তার ঠাণ্ডা কাঁধ থেকে কবন্ধের মতো হামাগুড়ি দিতে দিতে
তার জানুতে এসে ঝুলে থাকি একা, একা একা ব্রহ্মাণ্ডের সাত পাক
দেখে বিস্মিত হতে হতে ইচ্ছে করে আরও বেচেঁ থাকি,
আরও দীর্ঘ দীর্ঘ দিন। জন্ম থেকে শুরু করি জীবন, অথবা মৃত্যুর গায়ে ধাক্কা খেয়ে পিছু হঠতে হঠতে নতুন কোনো জন্মে গিয়ে ঠেকি।
কে আমাকে বাঁচতে দেবে আর!
সূক্ষ্ম সব সুতোয় কে জানে কোন ভোরে
নিজের সন্তান ভেবে, চোখের আড়াল হলে চোখের-জল ফেলা আত্মীয় ভেবে, বেঁধেছে, আমাকে আমার সময়।
কে যে দিয়েছিলো, কার হাতে কবে দিয়েছিলো আমার জন্ম মৃত্যু!
সময় সময় করে, আর কার কাছে, সময়ের কাছেই দিনভর দৌড়োই
আলোয় মেলে,ভালোবাসে তাকে জীবন্ত করে দেখি চোখ থেকে পাথর খসে যায়,
শরীর থেকে শুধু তার দুটো মুহূর্ত খসে না।
চোখে সে আবার দ্রুত পরে নেয় কুড়িয়ে পাওয়া কালো কাপড়।
উলঙ্গ রাত্তির জুড়ে নৈঃশব্দের হাওয়ায় সাঁতার কাটে বিষাদ,
দিনগুলো মুঠোয় নিয়ে স্তব্ধতা আমার চত্তরে চরকির মতো ঘোরে,
সময় দাঁড়িয়ে থাকে, কোনো কথা নেই। সময় দাঁড়িয়ে থাকে, কষ্ট নেই,
কাঁপন নেই। সময় দাঁড়িয়ে থাকে, পিছুটান নেই।
ঈশ্বরের মতো চলৎশক্তিহীন। সময়।
আমার সময়।
আমি তাকে ভালোবেসে,ঘৃণা করে, তাকে সসম্মানে, গোপনে,
তাকে হৃৎপিণ্ডে, রক্তচলাচলে বহন করি, বাঁচাই।
আমার সময়। আমার আততায়ী, আমি জন্মে তাকে জন্ম দিই।
সময় ঠিক এভাবেই দাঁড়িয়ে থাকবে ঠাঁয়
মুখ-মাথা ঢেকে, চোখ বুজে, পাথর চোখগুলো।
ধীরে ধীরে স্তব্ধতার গা ঘেসে দাঁড়াবে নৈঃশব্দ,
দৈর্ঘৈ আকাশ ছোবে, প্রস্থে দিগন্ত,
সময়ের সন্তান তারা; নিরাকার নির্বিকার উত্তরাধিকার।
কখনো আমার নিভৃত নিঃশ্বাসে বাসা বাঁধে পরাশ্রয়ী সময়,
কখনো তার ঠাণ্ডা কাঁধ থেকে কবন্ধের মতো হামাগুড়ি দিতে দিতে
তার জানুতে এসে ঝুলে থাকি একা, একা একা ব্রহ্মাণ্ডের সাত পাক
দেখে বিস্মিত হতে হতে ইচ্ছে করে আরও বেচেঁ থাকি,
আরও দীর্ঘ দীর্ঘ দিন। জন্ম থেকে শুরু করি জীবন, অথবা মৃত্যুর গায়ে ধাক্কা খেয়ে পিছু হঠতে হঠতে নতুন কোনো জন্মে গিয়ে ঠেকি।
কে আমাকে বাঁচতে দেবে আর!
সূক্ষ্ম সব সুতোয় কে জানে কোন ভোরে
নিজের সন্তান ভেবে, চোখের আড়াল হলে চোখের-জল ফেলা আত্মীয় ভেবে, বেঁধেছে, আমাকে আমার সময়।
কে যে দিয়েছিলো, কার হাতে কবে দিয়েছিলো আমার জন্ম মৃত্যু!
সময় সময় করে, আর কার কাছে, সময়ের কাছেই দিনভর দৌড়োই
আলোয় মেলে,ভালোবাসে তাকে জীবন্ত করে দেখি চোখ থেকে পাথর খসে যায়,
শরীর থেকে শুধু তার দুটো মুহূর্ত খসে না।
চোখে সে আবার দ্রুত পরে নেয় কুড়িয়ে পাওয়া কালো কাপড়।
উলঙ্গ রাত্তির জুড়ে নৈঃশব্দের হাওয়ায় সাঁতার কাটে বিষাদ,
দিনগুলো মুঠোয় নিয়ে স্তব্ধতা আমার চত্তরে চরকির মতো ঘোরে,
সময় দাঁড়িয়ে থাকে, কোনো কথা নেই। সময় দাঁড়িয়ে থাকে, কষ্ট নেই,
কাঁপন নেই। সময় দাঁড়িয়ে থাকে, পিছুটান নেই।
ঈশ্বরের মতো চলৎশক্তিহীন। সময়।
আমার সময়।
আমি তাকে ভালোবেসে,ঘৃণা করে, তাকে সসম্মানে, গোপনে,
তাকে হৃৎপিণ্ডে, রক্তচলাচলে বহন করি, বাঁচাই।
আমার সময়। আমার আততায়ী, আমি জন্মে তাকে জন্ম দিই।
এখন পর্যন্ত কবিতাটি পড়া হয়েছে ১৫৭ বার
যদি কবিতাটা সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন