রাত্রির দেহে জন্ম নেয় এক বহুবর্ণ ছায়া,
যার চোখে থমকে আছে এক মৃত সূর্যের অস্ফুট আর্তনাদ।
সে হেঁটে চলে প্রাসাদের শিকড়ে,
যেখানে সৌন্দর্য নয়—তার নকল মৃত্যুর বিলাসী প্রতিমা।
ধূলিঘরে আটকে থাকা এক আর্দ্র শব,
মুখে হাসির মতো খোদিত বিভ্রম।
তার ঠোঁট গলে পড়ে, পঁচে ওঠে দীর্ঘ শাদা চুম্বন,
আর বিষাক্ত এক বাতাসে ভাসে আত্মার লোলুপ প্রতিচ্ছবি।
শবদেহের অভ্যন্তরে যে রাক্ষস,
তাকে বলা হয় অলংকারের দণ্ডায়মান গর্ব,
সে চোখে মেখে নেয় রক্তরাঙা কাজল,
আর জিভে মেখে নেয় দেবীর নাভির গন্ধ।
সে হাঁটে…
তার পায়ের নিচে সুন্দরের সব পূর্ণচ্ছেদ,
আর হাঁটু ছুঁয়ে থাকে দীর্ঘশ্বাসের পঙ্কিল মাটি।
বালির নিচে সেঁধিয়ে থাকা স্বপ্নরা
আজ ফসিল হয়ে চিৎকার করে—
তাদের চোখে ছিল কেবল আলো নয়,
আলোর মৃত্যুর পূর্বাভাস।
যে আলো নিজের কুয়াশায় ডুবে ছিল
সে আজ পোড়ানো হাড়ের প্রদীপ হয়ে জ্বলে
তীর্থভ্রষ্ট আত্মার জিহ্বায়।
আর দেবী?
তার দেহ নেই, কেবল আছে পচে যাওয়া গন্ধের আয়ু।
তার প্রেমিকেরা সেই গন্ধেই যৌবন খোঁজে,
পাঁজরের ফাঁকে ফাঁকে গুঞ্জন তোলে অপবিত্র স্তব।
তাদের জন্য নেই কাঁধ, নেই কফিন,
শুধু একটাই লাশের চৌকাঠ—
যেখানে শুয়ে আছে এক ‘সুন্দর’ ইতিহাস,
যার বুক চিরে গজিয়ে উঠেছে রক্তমাখা গোলাপ।
আর সেই গোলাপে জড়িয়ে আছে রাক্ষসের শ্বাস,
আহ, কতটা সুগন্ধময় বিষ!
আত্মার হাড়ে হাড়ে বাজে মুগ্ধতা—
তবু শান্তি নেই।
শান্তি নামের যে রাত্রি,
তা এখন কেবল নকল সকালদের কবর।
এভাবে শেষ হয় বিলাসী সৌন্দর্য,
এভাবে জন্ম নেয় তার মৃত্যুর আয়না,
যেখানে প্রতিবিম্ব নয়,
রয়ে যায় কেবল পোড়া চোখের দাগ,
আর এক আশ্চর্য নিস্তব্ধ আহ্বান—
“জেগে ওঠো রূপের ছিন্নমস্তক,
আর একবার মরো ঠিকমতো…”
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন