_______________________
অনিরুদ্ধ বৈকালে ছেলেটির মূর্ছিত অবয়ব,
কখনো আকাশ কণ্ঠে গ্রীষ্মের কাটপোড়া অগ্নি,
কখনো নীলাক্ত আকাশ মিষ্টি রোদ্দুরে মেঘ-ভগ্নি।
জাদুর শহরে বাদুড় ঝোলা হয়ে থেমে চলা যানে,
ছেলেটি নির্বিঘ্নে মস্তক শূন্য তাকিয়ে যান্ত্রিকতার পানে।
বাড্ডা, রামপুরা, যাত্রাবাড়ী, কখনো বিশ্বরোড, মহাখালী,
যানভাড়ায় আদায়কারীর সমীপে অন্য যাত্রীদের তেরো-চৌদ্দ আর গালি।
ছেলেটি মস্তক শূন্য, সবই তার শ্রবে উদার,
যানের পু-প্যা, টিটিট হর্ণে, আংশিক আরজে তার কর্ণে।
বিরক্তির অভ্যাসে যানজটলায় অনুক্ষণেই গন্তব্য জোগার,
অল্প দৈর্ঘ্যে, মাঝারি চলায়,
এদিক-ওদিক নির্লিপ্ত দৃষ্টিতে রাস্তা পাড়।
ছেলেটি কিয়দংশ ভাবনায় আশ্রিত গন্তব্যে এবার,
দ্বারের চাবি মুড়তেই নিকষিত শূন্যতা সঞ্জীবন,
ছেলেটি হাহাকারের ভাষায় অজ্ঞ,
শূন্যই সম্ভাব্য জীবন।
চারকোনা ঘরে চারপায়ার চৌকি,
ঝুলন্ত একখানা সিলিং,
মেঝেতে ছিটকানো পরনের লুঙ্গি,
কারুশিল্পী আহত বইয়ের টেবিল একটি পড়ার।
সমস্তই যেন নিষ্প্রাণ,
অবশিষ্ট নেই কেউ ছেলেটিকে অভিবাদন করার।
ছ\’টি বোতাম শার্টে, তার চারটি প্রকাশ,
ধপাস শব্দে চিৎ হয়ে ছেলেটি নিতে চায় অবকাশ।
রাজ্যহারা দৃষ্টিতে সিলিংয়ের ঘূর্ণন,
শব্দটি গড়গড়, নাকি ফসফস?
মগজে ভুতুড়ে একাকীত্ব দোল খায়,
ঘুমের দরজায় নীরব হাঁসফাঁস।
ঘুমস্বপ্নে অতি উৎসাহে ছেলেটি ছুটছে তো ছুটছেই,
রাতের শহর অতিক্রম করে জোছনার পথে,
গন্তব্য তার ছোট্ট একটি পরিবার,
যেখানে সুখের ছায়া খেলে দোলনায়, দোলে অপার।
দুয়ারে দাঁড়িয়ে টক-টক, খুলে দিল দ্বার,
বাঙালি রমণি ঠোঁটে এক চিলতে ভুবন ডাঙ্গা হাসি,
কথারা জমে থাকা তার তরল দৃষ্টি,
আর ঘর্মাক্ত কপালে লেপ্টে থাকা চুল,
তার চারিধারে এগারো সন্তান,
ছেলেটিকে \”বাবা! বাবা!\” বলে আকুল।
স্বপ্নের দেয়াল ভেঙে যায়,
শূন্যতার নদী বয়ে যায় গভীর রাতে,
সিলিং ফ্যান তখনও ঘোরে, শব্দে ভাসে,
রাত্রি গভীর ঘুমভাঙা চোখে শূন্যতা শুধায়,
\”আসলেই কি আদৌও কোনোদিন পূর্ণতা আসে?\”
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন