সাইফুল ইসলাম মৌন

কবিতা - তুমি ছিলে ব্যথার বুনিয়াদ

সাইফুল ইসলাম মৌন

তুমি ছিলে ব্যথার বুনিয়াদ—
যেখানে দাঁড়িয়ে গড়ে তুলেছি ভালোবাসার মন্দির,
ইট ছিল না, ছিল তোমার অনুপস্থিতি,
সুরকি ছিল নীরব অভিমান,
আর ছাদের ফাঁকে ছিল এক চিলতে অসমাপ্ত আকাশ।
তোমার চোখে কখনো আমি নিজেকে দেখিনি—
তবুও বিশ্বাস করেছি, ওখানেই বাস করি আমি।
তোমার ঠোঁটের নিঃশব্দতা ছিল এক নিষিদ্ধ ধর্মগ্রন্থ,
যার প্রতিটি পৃষ্ঠা আমি পড়েছি চোখের বিষ্ণু জলে।
তুমি আমার পৃথিবীর প্রান্ত ছিলে—
যেখানে গিয়ে সব শব্দ থেমে যায়,চুপ থাকে,
আর শুধুই বেজে ওঠে সেই একটিমাত্র শব্দ:
“থেকেও নেই…”
তুমি ছিলে বৃষ্টির পূর্বমুহূর্তের কালজয়ী সুপ্র-
তুমি ছিলে দাঁড়িয়ে থাকা দীর্ঘ অপেক্ষার ঘ্রাণ,
আমি ছিলাম ছাতাহীন পথিক,
যে প্রতিবারই ভিজে গেছে তোমার অভিমানে।
তুমি ছিলে সেই চিঠি,
যা পোস্ট করা হয়নি কোনোদিন—
তবু আমার মনপোস্টবক্সে রোজ ফেরত আসে
তোমার না বলা কথার খামে ভরে।
তুমি ছিলে কষ্টের ক্যানভাস—
যেখানে আমি রং তুলতাম স্বপ্ন দিয়ে,
কিন্তু তুমি প্রতিদিন মুছে দিতে এক ফোঁটা অবহেলায়,
যেন আমি ছিলাম শুধুই আঁকাবাঁকা রেখার ভুল প্রবাহ।
তুমি ছিলে এক অসমাপ্ত সঙ্গীত—
তাল ছিলো, লয় ছিলো,
কিন্তু শব্দগুলো হারিয়ে গেছে—
তবু আজো কানে বাজে তোমার না গাওয়া গান।
তুমি ছিলে এক অনিবার্য শূন্যতা,
যে শূন্যতাকে পূর্ণ ভাবতে ভাবতেই আমি
নিজেকেই হারিয়ে ফেলেছি ধোঁয়ার মতন,
যেমন নিভে যায় শেষ কাঠির ধূপ এক নিঃশ্বাসে।
তুমি ছিলে ব্যথার বুনিয়াদ—
এখন সেই ব্যথার দেয়ালে আমি নাম লিখেছি নিজের,
আর লিখেছি তোমার নাম, খুব ছোট করে,
যেন কেউ পড়ে না…
শুধু তুমি জানো—এই যন্ত্রণার স্থপতি কে।

৩১
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন