বৃক্ষের আর্তনাদ
মাহফুজ রকি

আমি এক বৃক্ষ একাকী মন,রোদে পুড়ে, নিভেছে জীবন।
রোদে তোরে দিই শান্তি-ঘর, নিজে পুড়ি ধূসর প্রহর।
তুই এসেছিস, হেলান দিয়ে,ঘেমে গায়ে শান্তি নিয়ে।
চোখের কোণে ব্যথার ঢল, একটু দিস না কলসি জল?
পথ চেয়ে থাকি,কে আসবে জল নিয়ে এক ভাইয়ে?
কে বলবে-দোস্ত,তোর পাতার ছায়া দিলে আমায় ছুঁই।
কিন্তু না রে, তুই খালি চাস,ছায়া, ফল, সুখের বাতাস।
তোর চোখে আমি কাঠের গড়ন,নেই অনুভব নেই ধরণ।
তুই বলিস, তুই সেরা জাত—“আশরাফুল মাখলুকাত!”
তোর হাতে মোর জ্বালা,তোরি তরে প্রাণ হয় পুড়ন-তালা।
মোর চোখে শুধু জল,এই পোড়া গায়ে কে দেবে কোল?
তোর রোদে যখন পোড়ে মন,তখন ছায়ায় খুঁজিস জীবন।
বলি তোকে, মুখোশ খোলো,তোরা কি সত্যি মানব!বলো?
যদি আমার চোখে আয়নার জোর থাকতো,
তোর ভেতরের পশুটা ফাঁস করলে সবাই ঠিক দেখতো!
গদির ভাগে চোখ তোর লালে,বিবেক বসে শূন্যের গালে।
আমি বৃক্ষ-তবু প্রাণ আছে,তাই তো কাঁদি বুকের মাঝে।
রোদে পুড়ে নিঃস্ব হলেও,তবু আশায় দহনে বাজে।
আকাশে চেয়ে ডাকি নিরবে-“কবে আসিবে বৃষ্টি ঝরে?”
বৃষ্টি এলে টুপটাপ সুরে,সবুজ হয়ে যায় বুকের ভিতরে।
তখনও তোর মুখে উঠে সুর-কি কোমল ছায়া,কি মুগ্ধ নূর!
তুই শুধু নেবার মানুষ রে দোস্ত, ভুলিস যারে, সে তো বৃক্ষ।
ভালোবাসা পেলাম না রে, পেলাম শুধু অপবাদ,
এক ফোঁটা জল পেলাম না,তবু নেই প্রতিবাদ।
ভিতরেই জ্বলে আগুন,কে শুনে মোর “বৃক্ষের আর্তনাদ”?

রচনাকাল :০৩ জুন ২০২৫ খ্রি.,ছবি-সংগ্রহীত

৪৬
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন