একজন ধর্মপ্রণেতা

আবুল হাসান আবুল হাসান

(আশরাফুল আলমকে)

ছিলাম প্রথম ভ্রূণ খড়ের গাদায, ছিলাম তপ্ত লোহা, তোমার জ্বলন্ত ধাতু
ছিলাম মাটির বাসে লুকনো মোহর, ছিলাম শিল্পের লিপ্সা
জটিল বন্ধন।
আমাকে সমুদ্রস্নানে নিয়ে যাওয়া হলো একদিন, অসতী নারীর সঙ্গে,
আমাকে অরণ্যে নিয়ে যাওয়া হলো একদিন অসতী আলোর সঙ্গে,

এক যুবতীর জলের উপরে আমাকে ভাসতে দেওয়া হলো একদিন।
আমাকে জলের অর্থ বলে দেওয়া হলো এক জেলেনীর সঙ্গে শুতে দিয়ে।
আমাকে ঝর্ণার নৃত্য, সীমাবদ্ধ সমুদ্র দেখতে নিয়ে যাওয়া হলো
মরুদ্যানে, হায়
আমি কত কমনীয় খর্জুর বৃক্ষ দেখলাম!
আরব্য রজনী, শাহী গণিকাদের গোলগাল নাভির অপেরা হাউস!

আমি নৃত্যপরা তাবুর ভিতরে কত দেখলাম ঘুঙগুরের ঝাঁঝট তরঙ্গ
কত দেখলাম দহন চুম্বনে বদ্ধ সিংহমূর্খ, নরনারী
শিশু ও লোবান আর মৃত্যু ও আতরদানী কত দেখলাম।

সার্কাস কুমারী ছিল একজন, সেইখানে তাবুর ভিতরে
সে আমার দিকে তার ছিন্ন ঘাঘরার দ্যুতি ছুঁড়ে দিল,
নিদ্রার মিথুন মুদ্রা ছুঁড়ে দিল সেই প্রথম।

আমাকে মায়ের সঙ্গে পিতার কবর খুঁড়তে যেতে হলো, সেই প্রথম
গ্রীষ্মের ঝাপটা লাগা রাত্রিতে একদিন,
শুক্লা দ্বাদশীর রাত্রে জ্যোৎস্নায় আমি মায়ের নারীত্ব ছুঁই সেই প্রথম।

আমি তার ভ্রূণের ভিতর হিংসা ভ্রাতৃহিংসা হেনে ফের
ভ্রাতৃহন্তাকারী হই, পরিব্রাজক হই
পায়ের ভিতরে আমি সেই প্রথম অনুভব দাবী করি আরো
অজস্র অজস্র পা আমার শরীরে

নৃত্য করছে নৃত্যপর- তারা
সেই প্রথম আমাকে বোঝালো,

এইসব তামসপ্রবাহে মিগ্ধ স্নান সেরে নাকি এক
বিলুপ্ত জাতির ফের জাগরণ হবে,
এক কান্তিমান নাকি ফিরে আসবে আবার উষ্ণীষে,
কিন্তু কই? আমি যতবার আসি
ততবার ওরা তো আমাকে আজো হত্যা করে!
হত্যা করে ফেলে!
এখন পর্যন্ত কবিতাটি পড়া হয়েছে ৪৬ বার
যদি কবিতাটা সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন