অপেক্ষা
আবুল হাসান | কাব্য - পৃথক পালঙ্ক
বৃষ্টির ফোঁটাকে মনে হয় তোমার পায়ের পাতার শব্দ,
পাতার শব্দকে মনে হয় তোমার গাড়ীর আওয়াজ;
আমি চক্ষু সজাগ করি, কান উৎকর্ণ, ইন্দ্রিয় অটুট,
তুমি আসছো না, তুমি আসছো না–
তোমার কত হাজার বছর লাগবে আসতে?
জলের ভিতরে যেন পাথর এবং নুড়ি-তোমার ভিতরে ভেসে থাকে
হাজার হাজার প্রতীক্ষা তোমার, তুমি আসছো না, তুমি আসছো না,
তোমার কত লক্ষ বছর লাগবে আসতে?
আকাশের ভ্রূ চমকে জল নামে : জল আয়ুস্মতী :
আমি জলের উপরে সাঁকো গোছগাছ করে বাঁধি, ধনুকে লাগাই তীর,
মাঠের আলের কাদা ভেঙ্গে দেই বীজ ধানে, জ্বণের মৌসুমে;
নারীরা সন্তানবতী, লক্ষ্য দেই।
যখোন জীবন কোলে ফেলে দেয় অযত্নের আপন বিষয় :
ভুলে যাওয়া স্মৃতি, পয়সা, দুঃখ, ধ্যান, মনস্ক জগৎ :
আমি তুলে নেই যতে এ ওকে তখোন নাম দেই;
পাল্টে দেই রূপ, বর্ণ, অভিজ্ঞান, অবিচল বস্তুর ধারণা!
আমার স্পর্শে শূন্যে উদ্যানের ঘ্রাণ জন্মে : শস্যের চারায়
শহর সম্পন্ন লাগে, লক্ষ্য দেই : ক্লেদ, কুষ্ঠ ময়লা কালো জল,
রূপের রূগ্নতা ফেলে
আকাশ, অমৃত, নক্সা, ফলবতী মাটি ও মানুষ
তবু তুমি আসছো না, তবু তুমি আসছো না, কেন আসছো না?
কৃতিত্বে ধরেছে কীট, পরিস্থিতি পিঠ বাঁকা করে আজ নতমুখ,
এখন তোমাকে ওরা ছুঁয়ে দেয় শাবলের ধারালো বর্শায়;
এখন তোমাকে দেখে ঠাট মারে মূক বুদ্ধি,
অক্ষম চীৎকার, মৃত্যু, প্রতিবাদহীন জয়ধ্বনি :
উলঙ্গ শিশুর মতো শুয়ে থাকা এই অন্ধ নিষ্ফলা নির্মাণ,
এখন তোমাকে কত তুলে নেয় চলচ্চিত্র, কেবিনেট, সবুজ মহল,
রাজা আর রাজত্বের রঙ্গ টাকশাল :
তবু তুমি আসছো না, তবু তুমি আসছো না, কেন আসছো না?
অরণ্যে আপন মনে রুয়ে দেই, ঘনবর্ষা, আমফলের চাকা,
খুপরি দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে তুলি মহামারী;
তাতে কতো দিন বুনি, রৌদ্রে বুনি, শিল্প বুনি, সঞ্চরণ বুনি,
প্রজ্ঞা যদি কালো মাটি : আমি তাতে ফলাই মনীষা,
তবু তুমি আসছো না, তবু তুমি আসছো না, কেন আসছো না?
লোহায় লোহিতবর্ণ মানুষের শাদা কালো বর্ণের বিভেদে
যখোন পালক খসে : অস্ত্রাঘাত যখোন যুদ্ধের কালো লেখা
ছলকে ছলকে ধরে অধঃপাত, সুন্দরের শ্রেষ্ঠ অপচয়;
জলে ও ডাঙ্কায় আমি বাঁধ দেই : শরীরে ঠেকাই বন্যা, প্রতিঘাত,
স্বপ্নের ভিতর স্বপ্নের বিদ্ধ করি আবার আমাকে;
তবু তুমি আসছো না, তবু তুমি আসছো না, কেন আসছে না?
পাতার শব্দকে মনে হয় তোমার গাড়ীর আওয়াজ;
আমি চক্ষু সজাগ করি, কান উৎকর্ণ, ইন্দ্রিয় অটুট,
তুমি আসছো না, তুমি আসছো না–
তোমার কত হাজার বছর লাগবে আসতে?
জলের ভিতরে যেন পাথর এবং নুড়ি-তোমার ভিতরে ভেসে থাকে
হাজার হাজার প্রতীক্ষা তোমার, তুমি আসছো না, তুমি আসছো না,
তোমার কত লক্ষ বছর লাগবে আসতে?
আকাশের ভ্রূ চমকে জল নামে : জল আয়ুস্মতী :
আমি জলের উপরে সাঁকো গোছগাছ করে বাঁধি, ধনুকে লাগাই তীর,
মাঠের আলের কাদা ভেঙ্গে দেই বীজ ধানে, জ্বণের মৌসুমে;
নারীরা সন্তানবতী, লক্ষ্য দেই।
যখোন জীবন কোলে ফেলে দেয় অযত্নের আপন বিষয় :
ভুলে যাওয়া স্মৃতি, পয়সা, দুঃখ, ধ্যান, মনস্ক জগৎ :
আমি তুলে নেই যতে এ ওকে তখোন নাম দেই;
পাল্টে দেই রূপ, বর্ণ, অভিজ্ঞান, অবিচল বস্তুর ধারণা!
আমার স্পর্শে শূন্যে উদ্যানের ঘ্রাণ জন্মে : শস্যের চারায়
শহর সম্পন্ন লাগে, লক্ষ্য দেই : ক্লেদ, কুষ্ঠ ময়লা কালো জল,
রূপের রূগ্নতা ফেলে
আকাশ, অমৃত, নক্সা, ফলবতী মাটি ও মানুষ
তবু তুমি আসছো না, তবু তুমি আসছো না, কেন আসছো না?
কৃতিত্বে ধরেছে কীট, পরিস্থিতি পিঠ বাঁকা করে আজ নতমুখ,
এখন তোমাকে ওরা ছুঁয়ে দেয় শাবলের ধারালো বর্শায়;
এখন তোমাকে দেখে ঠাট মারে মূক বুদ্ধি,
অক্ষম চীৎকার, মৃত্যু, প্রতিবাদহীন জয়ধ্বনি :
উলঙ্গ শিশুর মতো শুয়ে থাকা এই অন্ধ নিষ্ফলা নির্মাণ,
এখন তোমাকে কত তুলে নেয় চলচ্চিত্র, কেবিনেট, সবুজ মহল,
রাজা আর রাজত্বের রঙ্গ টাকশাল :
তবু তুমি আসছো না, তবু তুমি আসছো না, কেন আসছো না?
অরণ্যে আপন মনে রুয়ে দেই, ঘনবর্ষা, আমফলের চাকা,
খুপরি দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে তুলি মহামারী;
তাতে কতো দিন বুনি, রৌদ্রে বুনি, শিল্প বুনি, সঞ্চরণ বুনি,
প্রজ্ঞা যদি কালো মাটি : আমি তাতে ফলাই মনীষা,
তবু তুমি আসছো না, তবু তুমি আসছো না, কেন আসছো না?
লোহায় লোহিতবর্ণ মানুষের শাদা কালো বর্ণের বিভেদে
যখোন পালক খসে : অস্ত্রাঘাত যখোন যুদ্ধের কালো লেখা
ছলকে ছলকে ধরে অধঃপাত, সুন্দরের শ্রেষ্ঠ অপচয়;
জলে ও ডাঙ্কায় আমি বাঁধ দেই : শরীরে ঠেকাই বন্যা, প্রতিঘাত,
স্বপ্নের ভিতর স্বপ্নের বিদ্ধ করি আবার আমাকে;
তবু তুমি আসছো না, তবু তুমি আসছো না, কেন আসছে না?
এখন পর্যন্ত কবিতাটি পড়া হয়েছে ৯০ বার
যদি কবিতাটা সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন