রাত তখন বারোটা ছুঁই ছুঁই।
ঢাকার ব্যস্ততা থেমে গেছে,
তবুও কবিরের ঘরের বাতি নিভে নাই।
ড্রয়ারের এক কোণে রাখা আছে একটি পুরনো খাম,
হলুদ হয়ে যাওয়া, মলিন কাগজে মোড়া।
এই খামে আছে এক চিঠি,
যা আজও সে পাঠায়নি।
লিখেছিল আজ থেকে ছয় বছর আগে,
যখন ফারিয়া হঠাৎ করেই হারিয়ে যায় তার জীবন থেকে।
ফারিয়া-বিশ্ববিদ্যালয়ে তার প্রথম প্রেম।
কবির ভেবেছিল, ভালোবাসলে মানুষ ফিরেই আসে।
কিন্তু ফারিয়া ফিরে আসেনি,
শুধু রেখে গিয়েছিল কিছু স্মৃতি, আর কিছু অবুঝ প্রশ্ন।
চিঠিটা শুরু হয়েছিল এমনভাবে,
“ফারিয়া, তোমাকে বলা হয়নি অনেক কথা।”
তারপর ছিল হাজারো না বলা অনুভূতি,
যা সে গুছিয়ে লিখেছিল এক নিশুতি রাতে।
আজ এত বছর পর, হঠাৎ করেই সে খবর পুতি
ফারিয়া আসছে দেশে, স্বামীর সঙ্গে নয়, একা।
বুঝতে পারল না, হৃদয়ে যে খাম সে এতদিন ধরে লুকিয়ে রেখেছে,
এখন কি তার দরজা খোলার সময় হয়েছে?
পরদিন সন্ধ্যায়, বইমেলার ভিড়ে হঠাৎ দেখা,
ফারিয়ার চোখে ক্লান্তি, ঠোঁটে নিঃশব্দ হাসি।
“তুমি কেমন আছো, কবির?”
কবির শুধু বলল, “তোমার জন্য একটা খাম রেখে- দিয়েছি,
আজও খোলা হয় নাই,
ফারিয়া কিছু না বলে তাকিয়ে রইল তার চোখের দিকে।
এক চিলতে হাওয়া উড়ে গেল তাদের মাঝখান দিয়ে।
হয়তো কোনোদিন সেই খাম খোলা হবে না।
তবুও, হৃদয়ে লেখা সেই চিঠি থেকে যাবে চিরকাল,
হৃদয়ের গোপন খাম হয়ে।

৩৪
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন