এ শহর আজ অসুস্থ,
ধুলো আর ধোঁয়ার মোড়কে আবৃত,
বাতাসে বিষাক্ত শ্বাস,
অট্টালিকা’র পর্দায় বিলীন প্রায় আকাশ।
নদীর জলে বিষ ঢেলে,
মাছেরা আজ বোবা।
মানুষের লিপ্সা’র কাছে,
প্রকৃতির নিবেদন হারা।
চিৎকারে ভাঙে ঘুম,
শুরু হয় যন্ত্রের গর্জন।
মানুষের মাঝে মানুষ নেই,
আছে কেবল পাশবিক মন।
নির্বাসিত স্বপ্নেরা হারিয়েছে পথ,
অলস বিকেলে খুঁজে মরে,চিরচেনা অবয়ব।
নগরীর অট্টালিকা, গর্বে উঁচু করে মাথা।
মানব মনের অন্তরে ক্ষয়ে যাচ্ছে মানবতা।
পথে ঘাটে যানজটের কান্নার রোল,
হর্ণের চিৎকারে বধির নগরী,
মানুষের মুখে মাস্কের প্রলেপ,
সবার চোখে ভীতি আর মনে উৎকণ্ঠার মেঘ।
নগরীর বুক চিড়ে চলছে নির্মাণ,
নিঃশব্দে কাঁদছে ভূতল,
প্রকৃতি আজ দিশেহারা,
নগরীর বুকে যেন ধুকধুকানি’র কম্পন।
বাতাসে মিশেছে রক্তের গন্ধ,
অশ্রুজলের বৃষ্টি,
স্মৃতির শহর আজ ক্লান্ত,
নতুন আশায় খুঁজছে মুক্তি।
নগরীর বুকে বাজছে বিষাদের বীণা,
ভোরের সূর্য উদিত হলেও
আলো যেন ম্রিয়মাণ!
চারিদিকে কেবল কংক্রিটের কোলাহল।
রাতের আকাশেও নেই চাঁদের হাসি,
নক্ষত্রের সাথেও মিলছে না আঁখি,
নগরীর অলিগলিতে অজানা ভয়,
রুদ্ধশ্বাসে বেঁচে আছে আপামর।
রাতের নিস্তব্ধতায় শোনা যায়,
প্রার্থনার মৃদু সুর,
মাতৃমূর্তির কোলে,
নগরী খুঁজছে শান্তির নূপুর।
তবুও কোথাও লুকিয়ে আছে আলোর কণা,
সবুজের মাঝে, ছোট্ট পাখির ডাকে,
কেউ একজন তুলে দিচ্ছে হাত,
নগরীকে নতুনভাবে জাগানোর প্রয়াস।
জেগে উঠুক প্রাণপ্রাচুর্য,
বাতাসে বহাল থাকুক সুস্থিরতা’র রেশ,
শহরের প্রতিটি কোণে,
ফিরে আসুক সজীবতা আর সদ্ভাব।
শহরের প্রতিটি ইট পাথরে,
লেগে থাকুক ইতিহাসের ছোঁয়া,
তথাপি ভবিষ্যতের পথে,
চলুক নগরী মাথা উঁচু করে, মুক্তির প্রহরে।
এই অসুস্থ নগরী একদিন ঠিক সেরে উঠবে,
ভালবাসার ছোঁয়ায়, যত্নের স্পর্শে।
মানুষের মনের শক্তিতে, প্রকৃতির দানে,
আবার ফিরবে এ-নগরীর ছন্দ।
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন