এই মাত্র তোমার পদধ্বনি মিলিয়ে গেল
হয়তো কোনো শালবনের ধূসর ছায়ার ভেতর,
কিংবা নদীর নিচে — যেখানে জোৎস্না আর কাদার মাঝে
আদমের আবির্ভাবের কয়েক কোটি রাত কাঁদে একান্ত একাকী!
আমি এখনও সেই পথ ধরেই হাঁটি,
যেখানে তোমার পায়ের শব্দ শুকনো পাতার ভিতর ঘুমিয়ে আছে—
আকাশ নেমে আসে কোনো
এক একাকী সন্ধ্যায়,
গাংচিলের নিরুদ্দেশ যাত্রার মতো।
আমার ঘরে আলো জ্বলে না আজকাল,
ছায়া এসে বসে থাকে উঠোনে আমার,
তোমার স্পর্শগুলো চেটেপুটে খায়।
চা ঠান্ডা হয়ে যায় বারান্দায়,
তবুও খালি কাপ নিয়ে বসে থাকে আমার অন্ধদৃষ্টি,
যেখানে তোমার স্পর্শগুলো ছুঁয়ে আছে আমায়।
জানালার ধারে সেই পুরনো কৃষ্ণচূড়ার ডাল
আজ আর ফাগুন ছড়ায় না —
হয়তো ফুল ফোটে,
তবে আমার চোখে তার কোন রঙ নেই।
তুমি ছিলে —
এই শহরের রাস্তায়, ট্রামের ভীড়ে,
মিছিলে হেটেছিলে কতকাল!
ভিজে রোদে, পায়ের নিচে পড়া
ফোস্কা ধরা উঠোনে,
বালিশের খাঁজে লুকিয়ে রাখা কোন চিঠিতে বাক্স বন্দী।
আমি এখনও তোমাকে খুঁজি
যেন অন্ধ হাত বাড়িয়ে ছুঁতে চাই চাঁদ।
আমি জানি,
হয়তো ফিরে আসবে না
আমাদের সে সকাল,
মিছিল শহরে জুটবে না ভবঘুরে
একদল বাউন্ডুলে আড্ডায়।
টেবিলে উঠবে না ঝড় মাও সে তুঙ্গ,
কিংবা ফিদেল কাস্ত্রোর অসম সাহসী লড়াইয়ে
হুজুগে বাঙালীর লেনিন কিংবা হো চি মিন হয়ে উঠার গল্প কথা!
আমার চারপাশে আজ কীট-পতঙ্গদের ভীড়।
তোমার পায়ের প্রতিটি শব্দে
আমি মিছিলের ঝড় শুনতে পাই।
মনে হয়,আমি একা নই!
তুমি নেই, অথচ
মিছিলে মিছিলে আমি তোমাকেই পাই,
অজস্র ভীড়ের মাঝে
আমার ভিতরে।
…… …..
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন