তুমি কি জানো—
একটা শূন্য সিজারিয়ান ওটিতে,
চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে—
এক জোড়া হাইপাররিয়ালিস্টিক চোখ,
যারা প্রতিটি নিঃশ্বাসে মেপে নেয়
ভ্রূণের মিথ্যে জন্মক্ষণ।
সেই চোখে আমি একদিন ফসিল হয়ে যাই—
আমার পাঁজরের খাঁচা খুলে
দেয়াল ঘেরা অপারগ বর্ণমালায়
নিষেধ লেখা ছিল,
“এখানে হৃদয় ঢোকানো নিষেধ!”
কিন্তু আমার ভিতরে তখন
আলঝেইমার মাখা একটা স্পর্শ
নিজেই নিজেকে চিনতে পারছিল না।
তোমার ত্বকের নিচে
যে সাদা ল্যাব-কোটের আবরণ—
তার সেলাইয়ের ফাঁকে
আমার কবিতাগুলো রক্তের মতো গড়িয়ে পড়ে,
যেমন স্যাঁতস্যাঁতে গুহায়
মোটেল-বাল্বের আলো ছুঁয়ে আত্মঘাতী হয়
একটা পরিত্যক্ত চিৎকার।
আমার প্রতিটি বাক্য
এখন কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো জমে আছে
তোমার হাইড্রোজেন-স্মৃতির গোপন ফোল্ডারে।
আমরা কেউই আর মানুষ নই,
তুমি একটা অ্যান্টিবায়োটিক ভুলে গিয়েছো,
আর আমি একটা সংক্রমণের নাম ভুলে বসেছি।
আমাদের মাঝে এখন
একটা পিল-খেয়ে ঘুমন্ত দেয়াল,
যার গায়ে লিখে রাখি—
“ভালোবাসা বলে কিছু ছিল,
তা এখন সাইনাসে আটকে আছে।”
তোমার দাঁতের ফাঁকে
আটকে থাকা লাল রঙের যে কথাটা
প্রতিদিন ব্রাশ করে ফেলে দাও—
সেটা ছিলো এক মৃত কবির উইল।
তুমি কখনও পড়ো নি,
তুমি শুধু রঙ দেখো— ব্যথা না।
আর আমি?
আমি এখন এক টুকরো এক্স-রে রিপোর্ট,
যার ভিতরে
একটা ঝলসানো ভবিষ্যৎ টিউমার হয়ে উঠছে।
ডাক্তার নেই,
শুধু বেদনার মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভরা
আমার শিরায় শিরায় ঢুকিয়ে দিচ্ছে
মেয়াদোত্তীর্ণ ভুলে থাকা স্মৃতি।
জানো,
রাতের অন্ধকারে তোমার ছায়া
কোনোদিন আমার পাশে বসে থাকেনি—
সে শুধু আমার বুক চিরে
একটা ফাইল খুঁজেছে—
যার নাম: “আত্মার অ্যান্টিবায়োগ্রাফি”।
যখন ঘুম ভাঙে না কোনো শব্দে,
তখন স্বপ্নের ব্ল্যাকহোলে
আমাকে ছুঁড়ে ফেলে দেয় তোমার লজ্জার পুরাতত্ত্ব।
আমার শরীর তখন
তামাকের মতো শুকিয়ে যায়—
তোমার নখের নিচে লেগে থাকে
সেই পোড়া মানুষের অবশিষ্ট ঘ্রাণ।
শেষ অবধি,
তোমার জরাজীর্ণ দেহের বুকের ঠিক নিচে
যে জায়গায় একফালি উষ্ণতা রেখেছিলে,
সেখানে এখন
একটা নারকিসিস্টিক অ্যাম্বুলেন্স ঘোরে—
আর আমি ভিজে গজের মতো পড়ে থাকি—
ধ্বংসস্তূপের গর্ভে।
পেনিসিলিন নামের মিথ্যে আশ্বাসে
জীবিত থাকার অভিনয় করে।
এটাই আমার শেষ শ্বাস,
যা কেউ শুনবে না,
শুধু তোমার বালিশের গায়ে লেগে থাকবে
মাইগ্রেন নামক দাহ।
অবশেষে, কোনো বিশ্বাস থাকেনি—
ছিল শুধু রোগ, আর ভুল ডায়াগনোসিসে লেখা একটা মৃত কবিতা।
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন