একটি শূন্যতা যখন দীর্ঘদিন নিঃশব্দে থাকে,
তখন তার হৃৎপিণ্ডে জন্ম নেয় এক হিংস্রতা—
না-রক্ত, না-শরীর,
তবু দাঁত ফেলে রাখে মানুষের ফুসফুসে।
তার আঙুল নেই,
তবু নিঃশব্দে চেপে ধরে দু’টি কাঁধের মাঝের ভাষাহীন সেতু,
যেটা ছিল—
না বলা স্পর্শের একটা জোনাকি-রেখা।
সে জন্তু কথা বলে না,
তবে চোখের পাতা নামিয়ে দিলে
ভিতর থেকে ঘুরে আসে তার নখের করাত।
হাসি দিলে সে হাঁসে না,
তবে ঠোঁট ছুঁয়ে দিলে দাঁতের কিনারে জমে ওঠে আগ্নেয়ঘৃণা।
একজন মানুষের হাত থেকে আরেকজনের নখরদূরত্ব যতটা—
ঠিক ততটুকু ব্যবধানে গড়ে ওঠে রাষ্ট্রীয় পশু,
তার লেজে বাঁধা থাকে সংবিধানের বিষাক্ত পালক,
যা দিয়ে লেখা হয় প্রেমের ফাঁসির রায়।
পৃথিবীর সবচেয়ে রোমান্টিক দূরত্ব এখন
একটি মৃত হরিণের চক্ষু ও তার দৃষ্টির মাঝখানে,
যেখানে শীতল নিঃশ্বাসে জেগে থাকে
ছিন্ন হরিণ-শিশুর প্রেমমৃত্যু।
ঘাসেরা এখন আর সবুজ নয়,
তারা ক্ষুধার্ত জিভ হয়ে ছিঁড়ে খায় চুম্বনের প্রতিশব্দ;
সেখানে যে নদী ছিল—
তার নাম এখন অজ্ঞাত ব্যাকরণ
আর স্রোত মানে উচ্চারণহীন কামনাতাড়িত রাষ্ট্রদ্রোহ।
এইসব হিংস্রতা একদিন দূরত্ব হয়ে ফাটিয়ে দেবে মহাবিশ্ব,
প্রতিটি কাঁধ, প্রতিটি বুক, প্রতিটি ঘামচিহ্ন
হয়ে উঠবে হিংসার জৈবিক পাণ্ডুলিপি।
আর ঠিক সেই মুহূর্তে
কোনো এক নারকীয় নিঃশ্বাস ফুঁ দিয়ে জ্বালিয়ে দেবে
প্রেমের সর্বশেষ শিশুকে,
যে এখনো পৃথিবীর সীমানায়
একটি মানবিক পশুর জন্ম দেয়ার অপেক্ষায়।
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন