দর্পণ কবীর

কবিতা - ছায়া গল্প

লেখক: দর্পণ কবীর

আমার পথ আটকে দাঁড়ালো এক ছায়া! আমি
এদিক-ওদিক যাওয়ার চেষ্টা করতেই ছায়াও সমান
তালে এদিক-ওদিক করে আমার সামনে মুখোমুখি,যেন
যমদূত দাঁড়িয়েছে! আমি ছায়ার দিকে রক্তচোখে
তাকালাম, চিন্তার মধ্যে গ্রীষ্মের তাপদাহে বিদ্যুতের
লোডশেডিংয়ের বিরুক্তি। ছায়া আমার রক্তচোখ
যেন দেখতেই পেলো না। ছায়া নয়, যেন
আমার পথ অবরুদ্ধ করে দাঁড়িয়েছে এক অনড় পাথর!

আমার মাথার ওপর আকাশ নেমে আছে, হাওয়ায়
উড়ে এসে শরীরে আছড়ে পড়ছে স্যাঁতস্যাঁতে
মেঘ, পাকস্থলীতে হরহর করে ঢুকে যাচ্ছে মেঘের পোড়াগন্ধ।
আমার বুক পকেটে সাজিয়ে রাখা কল্পনার বরফকুচি
গলে একাকার, অচল পয়সার মত কিছু কষ্ট
কেন জানি গুপ্তধনের ঐশ্বর্যের দ্যুতি ছড়াতে লাগলো। এতো
দ্রুত এতো কিছু ঘটে গেল, আমি বিবর্তনের কম্পন
বিন্দুমাত্র টের পেলাম না। এক ছায়া রহস্যের
সামনে কম্পমান আমার অস্থিত্ব। আমি নিজেকে প্রস্তুত
করে নিতে মাথা তুলে দাঁড়ালাম।

স্রোতস্বনী নদীগুলোর আজ অকারণ মন খারাপ, ভাটা
স্থির-জোয়ারের দেখা নেই। সমুদ্র জলে নেই ঢেউ, সৈকতে
জনশূণ্যতার বিলাপ, অরণ্য ছেড়ে পাখিরা গেছে
নির্বাসনে, জোছনা হারিয়ে চাঁদ হয়েছে অলুক্ষণে! কবিরা
শব্দ খুঁজে না পেয়ে
ডুবে গেল মদের পেয়ালায়, প্রেমিকার হৃদয়ে অভিমানের
অমবশ্যা! প্রতিদিনের চেনা পথ
আজ রহস্যময় কুহেলিকা, পথ নয় যেন সাত আসমানের
ওপর দিয়ে সর্পিলভাবে ছুটে চলা কোন জাদুকরী
কার্পেট! আমি ঘোরলাগা রহস্যের কুয়াশা
সরাতে ছায়াকে জিজ্ঞেস করি, ‘কে তুমি? কী চাও
আমার কাছে?’ ছায়া বলে, ‘আমি তোমার অভিশপ্ত নিয়তি!
পূন্যের চেয়ে তোমার ঢের বেড়েছে
পাপ! প্রায়শ্চিত্তে তোমাকে শুধরে দিতে
আমি তোমার ছায়া অভিশাপ!’

এখন পর্যন্ত লেখাটি পড়া হয়েছে ১৩৫ বার
যদি লেখাটি সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন