বর্ণাঢ্য দস্যিপনায় মুখর ছিল তোমার দুরন্ত শৈশব। নদীর
তীরে গাঙচিলের ডিম খুঁজে তন্ন তন্ন করেছো ঝাউবন, শামুক
কুড়ানো স্কুল বেলা স্মৃতির সেলুলয়েডে জীবন্ত ছবি।
দু’ হাতের মুঠোতে নিয়তিকে বন্দি করে খুলে বসেছো আজ
প্রাপ্তির হিসাব। করোজ্জ্বল আলোয় ধাঁধিয়ে থাকা তোমার জীবন
খুঁজে শৈশবের সোনালী দিন। তুমিও জানো, সৃষ্টি-প্রলয়ের
খুনসুটি, মানবিক প্রেম, সামাজিক দায়বোধ,
আলোর বিকিরণ-আঁধারের ছোবল যাপনের গন্ডিতে সাবলিল।
স্রষ্টার উদ্দেশ্যে অবনত হবার গৌরব নিয়ে আমাদের
জীবন নদীর মত প্রবাহমান। স্রষ্টা আছে কি নেই ‘বাহাস’
আছে, নিজেই স্রষ্টা সাজেন কেউ-কেউ, তথাকথিত সমাজ
বিরোধী বিপ্লবীরা মরুতেও তোলেন সমুদ্রের ঢেউ!
গাঁয়ের পথে একাকী দাঁড়িয়ে থাকা নিঃসঙ্গ তালগাছের মত
আজো বর্ণিল-দ্যুতিময় আমার একাকীত্ব। দূর আকাশে
হেলান দিয়ে পাহাড় যেমন আঁকে দিগন্তের সীমারেখা, আমিও
তেমনি আমার তারুণ্যকে উজ্জ্বল করেছি শৈশবের জলরঙে।
যে শৈশব তুমুল দস্যিপনায় ঠাসা, যে জীবন যাপনের
বর্ণাঢ্য সাতকাহনে ভরা, তেমন শৈশব বা জীবন
আমার নয়। ছন্দহীন, ব্যাপ্তিহীন, অবহেলিত আমার শৈশব
আমাকে দেয় নীরব কান্নার স্বরলিপি, পথ চলার লড়াকু সাহস!
তুমি হয়তো নিয়তি নির্ধারিত জীবনের রঙ্গমঞ্চে সুখি, আমি
নিঃসঙ্গ নিয়তির মুখোমুখি! রিক্ত, যাযাবর, ব্যর্থ কবি,
ভিখারী-ভবঘুরে বা যার আছে রাজপ্রসাদের জৌলুস, অঢেল
বিত্ত-বৈভব, প্রত্যেকে ফিরে পেতে চায় তার ফেলা আসা শৈশব।
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন