কষিত-কনককান্তি কমনীয় কায়।
গালভরা গোঁপ-দাড়ি তপস্বীর প্রায়॥
মানুষের দৃশ্য নও বাস কর নীরে।
মোহন মণির প্রভা ননীর শরীরে॥
পাখী নও কিন্তু ধর মনোহর পাথা।
সুমধুর মিষ্ট রস স অঙ্গে মাথা॥
একবার রসনায় যে পেয়েছে তার।
আর কিছু মুখে নাহি ভাল লাগে তার॥
দৃশ্য মাত্র সর্ব্বগাত্র প্রফুল্লিত হয়।
সৌরভে আমোদ করে ত্রিভুবনময়॥
প্রাণে নাহি দেরি সয় কাঁটা আঁশ বাছা।
ইচ্ছা করে একেবারে গালে দিই কাঁচা॥
অপরূপ ছেয়ে রূপ পুত্রশোক হয়ে।
মুখে দেওয়া দুরে থাক গন্ধে পেট ভরে॥
কুড়ি দরে কিনে লই দেখে তাজা তাজা।
টপাটপ্ খেয়ে ফেলি ছাঁকাতেলে ভাজা॥
না করে উদরে যেই তোমায় গ্রহণ।
বৃথায় জীবন তার বৃথায় জীবন॥
নগরের লোক সব এই কয় মাস।
তোমার কৃপায় করে মহাসুখে বাস॥
গুণেতে সবাই কেনা কে না করে সব।
কেন কেন কেনা কেনা কে না করে সব?
জলে স্থলে অন্তরীক্ষে হেন আর নেই।
যে দিলে তপস্যা নাম সাধু সাধু সেই॥
সব গুণে বদ্ধ তব আছে সর্ব্বজনে।
লোণাজলে বাস কর এই দুঃখ মনে॥
অমৃত থাকিতে কেন রুচি হয় বিষে।
লুণ-পেড়ো পোড়া জল ভাল লাগে কিসে॥
উলুবেড়ে আলো ক’রে করিছ বিহার।
নগরের উত্তরেতে গতি নাই আর॥
বেনোগাঙ্গে জোর ভাটা তাতেই সন্তোষ।
সমুদ্রের জল খেয়ে বৃদ্ধি কর কোষ॥
জলধি কোরেছে তব বহু উপকার।
লুণ খেয়ে গুণ গেয়ে কাছে থাকো তার॥
ক্ষীরোদমথনকালে অপূর্ব্ব ঘটন।
দেবাসুরে ঘোর দ্বন্দ্ব সুধার কারণ॥
সাগর-সলিলে হয় বিবাদ বিস্তার
গড়াগড়ি ছড়াছড়ি সুধার সুধার॥
সে সময়ে তুমি মীন অতি কুতূহলে।
খেয়েছিলে সেই জল তপস্যার ফলে॥
অমৃত-ভক্ষণে তাই এরূপ প্রকার।
সুমধুর আস্বাদন হয়েছে তোমার॥
এমত অমৃত-ফল ফলিয়াছে জলে।
সাহেবেরা সুখে তাই ম্যাঙ্গোফিস্ বলে॥
ব্যয় হেতু কোন মতে না হয় কাতর।
থানায় আনায় কত করি সমাদর॥
ডিস ভোরে কিস লয় মিস বাবা যত।
পিস করে মুখে দিয়ে কিস খায় কত॥
তাদের পবিত্র পেটে তুমি কর বাস।
এই কয় মাস আর নাহি খায় মাস॥
তোমায় অধরে ধরি বাড়ে কত সুখ।
মাঝে মাঝে সেরির গেলাসে দেয় মুখ॥
বেচিলর যারা তারা প্রসাদের তরে।
রান্নাঘরে ধন্না দিয়ে আয়োজন করে॥
হেসে হেসে ঘেঁসে ঘেঁসে কাছে গিয়ে বসে।
পেটে হারামের ছুরি মুখ ভরা রসে॥
টেক্ ফিস ব’লে ডিস কাছে দেয় ঠেলে।
সশরীরে স্বর্গভোগ এঁটো খেতে পেলে॥
বাঙ্গালীর মত তারা রন্ধন না জানে।
আধ সিদ্ধ করি শুধু টেবিলেতে আনে॥
মসলার গন্ধ গায় কিছুমাত্র নাই।
অঙ্গে করে আলিঙ্গন কমলিনী রাই।
হ্যাদে রে নিদয় বিধি ধিক্ ধিক্ তোরে।
কি হেতু বেলাক্ হিঁদু কোরেছিস্ মোরে॥
গোরা হ’লে হোরা মেরে চ’ড়ে মনোরথে।
টেবিলে যেতেম খেতে ডেবিলের মতে॥
প্রেমানন্দে পিস করি সুখে খায় মিস।
বলি হারি যাই তোরে ওরে ম্যাঙ্গোফিস॥
কিন্তু এক মম মনে এই বড় শোক।
না জানে তোমার গুণ উত্তরের লোক॥
তোমার চরণে করি এই নিবেন।
কর সবে সমভাবে দয়া বিতরণ॥
গোঁৎ করে সোঁৎ ঠেলে ভাটি গাঙ ছেড়ে।
উজানের পথে চল দাড়ি-গোঁপ নেড়ে॥
শাঁক ঘন্টা বাজাইবে বত মেয়ে ছেলে।
ভিটে বেচে পূজা দিব মিঠে জলে এলে॥
যথা ইচ্ছা তথা থাক মনোহর মীন।
পেট ভোরে খেতে যেন পাই এক দিন॥
তোমার তুলনা নহে কোটিকল্পতরু।
লঘু হয়ে হও তুমি সকলে গুরু॥
সব ঠাঁই আদর অমান্য নাই কভু।
শুদ্ধ সত্ত্ব ঠিক যেন খড়দার প্রভু॥
নিরাকার নিত্যানন্দ মীন অবতার।
নিত্য খেলে নিত্যানন্দ লাভ হয় তার॥
খেতে যদি নাহি পাই মুখে লই নাম।
প্রণাম তোমার পদে সহস্র প্রণাম॥
কত জলে থাক তুমি নাহি তার লেখা।
তোমায় আমায় হয় সহজে কি দেখা॥
কতরূপ ভাবসূত্র মানবের মনে।
পেয়েছি তোমায় আমি জেলের কল্যাণে॥
গাভীন হইলে তুমি রস তায় কত।
রাঁড়া হ’লে বাড়া সুখ নাহি. হয় তত॥
তোমার ডিমের স্বাদ সুধার সমান।
গণ্ডা গণ্ডা এণ্ডা খেয়ে ঠাণ্ডা করি প্রাণ॥
প্রসব করিবে যত তবু রবে তাজা।
আমাদের আশীর্ব্বাদে হবে নাক বাঁজা॥
জন্ম-এয়ো হও তুমি রসবতী সতী।
পোয়াতীর গর্ভে থেকে হও গর্ভবতী॥
কোন মতে নাহি মেটে বাসনার ক্ষোভ।
যত পাই তত খাই তবু বাড়ে লোভ॥
ভেজে খাই ঝোলে দিই কিংবা দিই ঝালে।
উদর পবিত্র হয় দিবা মাত্র গালে॥
আচার ছাড়িয়া যদি আচার মিশাই।
সে আচারে কোনরূপে অনাচার নাই॥
কুলাচার কেবা ছাড়ে লয়ে কুলাচার।
আচারে আচার বাড়ে সকল আচার॥
যাতে পাই তাতে খাই করি বাজী ভোর।
হায় রে তপস্যা তোর তপস্যা কি জোর॥

০
০
সেভ বা রিয়েক্ট করার জন্য লগইন করে নিন!
৫০
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন