ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত

কবিতা - মেকি ব্রাহ্মণ পণ্ডিত

ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত

ব্রাহ্মণ-পণ্ডিত যত, সকলেই অনুগত,
অবিরত উপকার পান।
তোমাদের মত হ’লে, বিধি আছে আছে ব’লে,
এখনই দিবেন বিধান॥
পুঁথি লয়ে রাশি রাশি, কাছে আসি হাসি হাসি,
কহিবেন হইয়া প্রধান।
হিন্দুবালা বিধবার, বিয়ে হবে পুনর্ব্বার,
শাস্ত্রে তার রয়েছে প্রমাণ॥
শাস্ত্র এই, বিধি এই, অর্ব্বাচীন মূঢ় যেই,
বলে সেই অথে নাহি বিধি।
বিচার করুন এসে, শাস্ত্র তার কত এসে,
দেখিব কেমন বিদ্যানিধি॥
অতিশয় দুরাশয়, যারা হয় তারা কয়,
পরিণয় নয় নয় বলে।
কিছু নাই বোধাবোধ, কথায় কথায় ক্রোধ,
অনুরোধ উপরোধ চলে॥
কেবল মুখেতে জাক, ভিতরে সকলি ফাঁক,
মিছে হাঁক মিছে ডাক ছাড়ে।
ফেঁদে টোল মারে ঢোল, মিছামিছি করে গোল,
গোলমালে হরিবোল পাড়ে॥
সব শাস্ত্র আছে পড়া, শাস্ত্র সব হাতে গড়া,
মতামত আমাদের ঘরে।
আমাদের পোড়ো যারা, পণ্ডিত হইয়া তারা,
টোল ক’রে গোল কোরে মরে॥
আমার মুখের চোটে, কার সাধ্য এঁটে ওঠে,
কেটে কুটে করি ছারখার।
তোমার কল্যাণে বাবু, সকলে করিব কাবু,
দেখ কত ক্ষমতা আমার॥
করিলাম এই পণ, স্মার্ত্ত আছে কত জন,
দেখি দেখি কেবা কিবা বলে।
বিচারে যদ্যপি হারি, প্রমাণ না দিতে পারি,
পুঁথি সব ফেলে দিব জলে॥
কালী কালী মুখে ডাকি, যত দিন বেঁচে থাকি,
আশীর্ব্বাদ করিব তোমায়।
কোরো এই উপকার, যেন কটা পরিবার,
অন্ন বিনা মারা নাহি যায়॥

৯২
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন