জেন্ট এখন আছে ২২ তলা বিল্ডিং-এর আন্ডারগ্রাউন্ডে।জেন্টকে দেয়া পরিকল্পনা বাস্তবায়নের যাবতীয় মানচিত্র জেন্ট কমপ্লিট করে ফেলেছে।এর মধ্যে অজিত দেবনাথ লোকেশন সাজেস্ট করে রিপোর্ট দিয়েছে।লোকেশন যথার্থ।জেন্টের আজ মনটা কেমন অস্থির হয়ে আছে।কিছুই ভালো লাগছে না।না নারী না মদ না টাকা।এক জীবনে তো নারী মদ টাকা কম হলো না।কী হবে এতোসব দিয়ে।জীবন তো এক সময় ফুরিয়েই যাবে।ছোট্ট একটা জীবন বড়োজোর ৭০ বছর।জেন্ট নিজেই অবাক হয়- এসব সে ভাবছে কেনো!সে নিজেকে প্রশ্ন করে- কেমন আছো অভিজিৎ?
জেন্ট তো আসলে জেন্ট নয়।জেন্ট হলো অভিজিৎ। এখানে কারোরই অরিজিনাল নাম ব্যবহৃত হয় না।সবাই ছদ্মনামে পরিচিত যেমন পলল আসলে পরিমল ঘোষ, সুজয়া হলো পূরবী বসু,জেন্টও জেন্ট নয়,অভিজিৎ চৌধুরী।এইসব নাটকময় জীবনের কি কোনো অর্থ হয়! বস্তুত শুধু অর্থের (টাকা) জন্য এইসব নাটকের অর্থ আছে কোনো!
অভিজিৎ মানে জেন্ট বেল প্রেস করে।সুজয়া এসে দাঁড়ায়।সুজয়া মেয়েটা দেখতে কোমল সুন্দরী। মানুষ হিসেবেও কোমল কিন্তু এমন একটা চাকুরি সে করছে যা মোটেই কোমল নয় বরং নৃশংস।এবং অদ্ভুত ব্যাপার হলো পুরবী বসু মানে এই সুজয়া মেয়েটা নিজেও জানে না যে সে যে চাকুরিটা করছে তা মূলত ভয়ংকর ও বিভৎস একটি চাকুরি। জানলে সে হয়তো চাকুরিটা ছেড়ে দিতো কিন্তু জানার কোনো উপায় নেই যেমন এই যে এখন এই মুহুর্তে সুজয়ার পক্ষে জানা সম্ভব নয় যে এখন সুজয়া জেন্টকে যে-পানীয়টা পরিবেশন করবে তার মধ্যে মেশানো আছে এমন এক মেডিসিন যা পান করার পর জেন্ট গাড়ি ড্রাইভ করে এক্সিডেন্ট করবে অনিবার্যভাবে।জেন্টের মগজ ক্রমশ অ্যাবনরম্যাল হতে থাকবে এবং তার মিধ্যে আত্মহত্যা প্রবণতা ভর করবে।এসবের কোনো কিছুই সুজয়ার জানা নেই।জানবেও না সে।জানাটা তার চাকুরির দায়িত্বের মধ্যে বা চাকুরির সংবিধানে নেই।তাকে যা সরবরাহ করতে বলা হবে সে তাই করবে।
জেন্ট বললো -আমি বেরুবো।পললকে গাড়ি রেডি করতে বলো।
সুজয়া পানীয় রেখে ‘জ্বি স্যার’ বলে চলে গেলো।
জেন্ট তড়িঘড়ি করে শুধু এক গ্লাস জল খেয়ে বেরিয়ে গেলো।বের হবার ৪৫ মিনিট পর মারাত্মক এক সড়ক দুর্ঘটনায় জেন্টের মৃত্যু হলো।
এটাই নিয়ম।যাকে যে উদ্দেশে নিয়োগ দেয়া হয়, কাজ শেষ হলে তাকে সরিয়ে ফেলা হয়।একেকজনকে একেকভাবে সরানো হয়।কাউকে পয়জন দিয়ে কাউকে ঘুমের মধ্যে কাউকে ডিরেক্টলি ফায়ার করে কাউকে সমুদ্রে ডুবিয়ে। কারণ কর্তৃপক্ষ চায় না তাদের কাজের কোনো সাক্ষী থাকুক যেহেতু এখানে জাতীয় নয়,চলে আন্তর্জাতিক খেলা।আর এ খেলার নিয়ম হলো প্রতিটি খেলোয়াড়কে খেলা শেষে মেরে ফেলা।কিংবা খেলোয়াড়দের বলা যায় ঘুটি। খেলা শেষ হলে ঘুটিগুলি সরিয়ে ফেলতে হয় নির্মম ও নিরাপদ পদ্ধতিতে।কিন্তু কে মারছে কার ইশারায় – তা কেবলি রহস্যের ধূম্রজাল হয়ে থেকে যায়।
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন