মৃত্যুর প্রহর গুনেগুনে আর কাটবে কতকাল?
এমন জীবন অথবা জীবনের ছল
আমিতো চাইনি কখনো; নেই জীবনের কোন অধিকার
বুঝি মৃত্যুরও নেই! এমন দশাহীন মৃত্যুর প্রহর গুনেগুনে আর
কতকাল কাটবে বল? এমন অধিকারহীন
আমাকে বলো রাখবে আর কতদিন?
তোমাদের বুদ্ধিবৃত্তির আগুনে আত্মা পুড়েছে আমার
পায়ের নীচে বারবার
শুল বিধে যেন তোমাদের সাজানো কোমল মৃত্তিকার মিছিল
তোমাদের কথা, যা কেবলই টক্সিক, আবিল;
মগজের বীজতলা দগ্ধ করে কালেকালে
গাঁয়ের উঠোনের ভিটিটায় কিংবা সজিনার ডালে
আর অভ্যাসমতো ভোরের কাকেরা বসে না
কাকডাকা ভোরে ঘরেঘরে কিষাণীরা জাগে না
আর; হয়তবা জেগে আছে আধখানা চাঁদের রাতে
কঠিন হাতুড়ি কোমল হাতে
ঐ পাশের ইটখোলাটায়
-এমনই ভাবে একাকার দিন যায়, রাত যায়
আর ভাবতে পারি না, ভাবনার বন্ধন
বারবার ছিড়ে যায়, গঞ্জিকাসেবির মতন
সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায়; এওকি ভুল দেখা-
বুভূক্ষু রাতের মাঝনদীতে আছে ঐ নৌকা বাধা;
চারিদিকে অন্ধকার ঘোলাজল
নইমুদ্দীন ঐ ডুবেডুবে কেবল
এক-দুই-পাঁচ শো বালতি ভ’রে নৌকা ভরে
কেবলই বৈরী নিকষ কালো রজনী ধরে
বলতে পারো, ও কোন মাণিক্য, কোন মহাসুখের জন্য
নাকি কেবলই দুমুঠো ক্ষুধার অন্ন?
অথচ তোমাদের কথিত রাজকীয় পরিকল্পনার ফাঁক গলে-গলে
কেমন মিশে যায় অন্তরীক্ষে জলে-স্থলে
কোটি রক্ত-বৈভবের বিশাল পাহাড়!
বলো মহারাজ, কার এ দায়ভার?
বলতে পারো ধর্মের রাজা কোনো বিশ্বাসের জোরে-
এ কার পাপে পৌষের ঠান্ডা ঘরে
ঢোকে আকালিক বন্যার ঘোলাজল?
কার পাপে ঘরের কিষাণী ঐ অনর্গল
ইটখোলাটায় ক্ষুধা-ক্লিষ্ট গায় জীর্ণ জোছনা মাখে?
আর অন্ধকারে ইজ্জত ঢাকে
ভিতরে ক্ষুধার আগুন জ্বালি
বলতে পারো নষ্টের ভগবান, কষ্টের কৃষ্ণকলি
মাঝনদীতে নৈমুদ্দিন কটি ডুব দিল যে
কেবলই দুমুঠো ভাতের খোঁজে
তোমাদের বুদ্ধিবৃত্তি দিনেদিনে বড়ই স্থূল হয়ে ওঠে
অথবা বঙ্কিম, হতে পারে কোকিলদশা বটে-
কার ভ্রুণে দিয়ে যায় অনর্গল উত্তাপ
কোন সে ধূসর কাক
তা সে জানে না, বলি জানবে কী করে!
তোমাদের মেকি ভালোবাসার উগ্রতা আমারে তারে
এমনি মুগ্ধ করে; মুর্ছিত দশা যার শেষ!
আমি আজ ক্যাটালেপ্টিক, কেমন নিথর বেশ!
তোমরা চালাও কোটি নীতির ছুরিতে অপারেশন
যথেচ্ছা যখন তখন
তবুও মৃত্যু নেই- জীবনও না
বলো, এ কোন দশা! এ কোন জীবনপনা!
এ দশাহীন দশা বলো কাল-নিশীর মতো থাকবে আর কতকাল?
কতকাল আর ভাঙবে পাথরের মতো কেবলই আমাদের কপাল?
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন