নারী: আমার অভিধান

রফিক আজাদ রফিক আজাদ

আমার নিকট তুমি এক মূর্তিমান অভিধান;
খুচরো অথবা খুব দরকারি ভারী শব্দাবলি
টেবিলে ঈষৎ ঝুঁকে নিষ্ঠাভাবে যে-রকমভাবে
দেখে নিতে হয়, প্রয়োজনে তোমাকে তেমনি পড়ি।
তুমিই আমার হও বিশ্বাস-স্থাপনযোগ্য সেই
বিশুদ্ধ মৌলিক গ্রন্থ তোমাকে পড়েই শিখে নিই
শব্দের সঠিক অর্থ, মূল ধাতু, নির্ভুল বানান।
তোমাকে দেখেই জেনে নিই কোন ঠিকানায় আছে
সুন্দরের ঘরদোর,—বিশ্বব্যাপী যুদ্ধের বিরুদ্ধে
কী-কী অস্ত্র প্রয়োগের প্রয়োজন, তাও জানা হয়।
তোমার হাঁটার ভঙ্গি দেখে মুহূর্তেই শেখা হয়
কবিতায় ব্যবহার্য সমস্ত ছন্দের মূলসূত্র।
এজন্য আমাকে কোনো প্রবোধচন্দ্রের গ্রন্থাবলি
কোনোদিন পড়তে হয় নি—এবং একথা সত্য,
পড়ব না—যতদিন নৃত্যপর নারীর শরীর
আমার চোখের সামনে প্রকৃতির মতো রয়ে যাবে।
হরিচরণের কাছে, আপাতত, কোনো ঋণ নেই
যতদিন পৃথিবীতে তোমরা রয়েছ, ততদিন
প্রয়োজন নেই কোনো ব্যাকরণ কিংবা অভিধানে;
সত্যি কথা বলতে গেলে, এমনকি, দরকার নেই
কোনো ফুলে। কেননা, নারীর নগ্ন শরীরের মতো
ঘ্রাণময়ফুল আমি এ জীবনে কখনো শুঁকি নি।
যে সৌগন্ধ্য রয়েছে নারীর, সেরকম গন্ধবহ
ফুলের সাক্ষাৎ আমি এখনো পাই নি কোনো ফুলে।
আমার হাতের কাছে সর্বদা সরল শব্দকোষ,
হয়ে আছ, আজীবন। যদিবা দৈবাৎ পড়ে যাই
দুর্বোধ্য, রুক্ষ, অপরিচিত শব্দাবলির সম্মুখে
স্বভাবত, তোমাকে দেখেই সাহস সঞ্চয় করি।
সুন্দরের দিকে রয় আমার প্রধান প্রবণতা;
তোমার শরীর হয় কবিতার পবিত্র পুরাণ,
গরীবের কানাকড়ি, বিধবার শেষ সাদা শাড়ি।
এখন পর্যন্ত কবিতাটি পড়া হয়েছে ৩২৩ বার
যদি কবিতাটা সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন