মানুষের মানচিত্র ১৮

রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ

ঘন্টায় তিরিশ টাকা। কম নাই। আমাদেরও প্যাট আছে সাব, আমাদেরও সাধ আছে।পাঁচ টাকা সের চাল, কেমনে বাঁচুম! গতরে তুফান তুলে দুয়ারে লাগালো খিল পাড়ার রমনী, তখন ঝিমায় গেছে নবমীর ঘোলাচাঁদ দূরের আকাশে…

নর্দমায় পচা কফ, কালো রক্ত, বীর্য,মুত, মাতালের বমি। বাতাশে মদের গন্ধ, বেসুরো গজল আর খিলখিল হাসি। ঘুমন্ত শিশুর পাশে পিষ্ট হয় ন্যাংটা দেহ, ভাড়াটে শরীর, ষ্টোভে ভাত ফোটে, দরোজায় গেঁথে থাকে দালালের ধূর্ত চোখ।

জ্বলে সুখ, গেরস্থালি-শীতল আগুনে তার মজ্জা-মাংশ জ্বলে, বয়স্ক জরায়ু যেন ক্রমশ শুকায়ে আসে জীবনের স্বাদ। নালায় থুবড়ে পড়ে সাধের বাসনগুলো মাতালের মতো, বেসুরে হার্মোনিয়াম বাজে তার রংচটা বর্নহীন বুকে-

ফ্যাকাশে সকাল ভাঙা দেয়ালের কাছে এসে থমকে দাঁড়ায়, নিশিথের ক্ষতটারে মোছাতে পারে না। পারে না রোদের জল ধোয়াতে জীবন, এই নষ্ট ফল, এই মানুষের নষ্ট হিয়া- সূর্য শুধু স্বপ্ন আনে, মানুষের ভাঙা-স্বপ্ন জোড়াতে পারেনা।

নেশায় ঘোলাটে চোখ, টলতে টলতে যায় বুকের বাসনা, অন্ধকারে শাড়ি খোলে কারো বোন, কারো বধু, কারো বা জননী। দেহের আগুন নয়, ক্ষুধার আগুনে পোড়ে এই সব বুক, জীবনের মাংশে এক বিষফোড়া, জীবনের গভীর অসুখ।।
এখন পর্যন্ত কবিতাটি পড়া হয়েছে ১০৭ বার
যদি কবিতাটা সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন