ভাবো সেই সন্ধ্যাজাল অস্ফুট বাতাস আমি আভাময় পায়ে হেঁটে গেছি
পাথরবিছানো পথে পথে
তোমার দুঃখের পাশে দীক্ষা নেব ইচ্ছা ছিল কত
প্রেমের পল্লব সর্বঘটে
ভেবেছি এত যে দল, দল দল, আমারও কি জায়গা নেই কোনো?
মাঠের বিপুল ভেঙে দোলানোলণ্ঠন যায়, দূরে সরে বালকের স্মৃতি
প্রধান সড়কে আমি, আমারও কি জায়গা নেই কোনো?
পদ্মার তুফান দেয় টান নৌকো খান খান
পেরিয়ে এসেছি কত সেতু
তোমার দুঃখের পাশে বসে আছে জনবল চোখে রুপা ইলিশের দ্যুতি
আমিও প্রণাম করি বুকে লাগে শ্যামল বিনয়ভূমি, তুমি
মাথায় রেখেছ হাত স্নেহভরে, বলো
‘কী তোমার গোত্রপরিচয়?’
পরিচয়? কেন পরিচয় চাও প্রভু?
ওই ওরা বসে আছে অন্ধকার বনচ্ছায়ে সকলেই ঋদ্ধপরিচয়?
বনে ভরে আগুনকুসুম
আপন সোপানে কারা জলস্রোতে দেখেছিল মুখ?
বুকে জ্বলে আগুনকুসুম
আমি যে আমিই এই পরিচয়ে ভরে না হৃদয়?
কেন চাও আত্মপরিচয়?
কোথায় আমার দেশ কোন্ স্থিতি মৃত্তিকার কুল
কোন্ চোখে চোখ রেখে বুকের আকাশ ভরে মেঘে
দেশদেশান্তর কালকালান্তর কোথায় আমার ঘর
তুমি চাও গোত্রপরিচয়।
পিছনে পিছনে এত বাঁধা আছে হৃদয়ের মানে আর
শিকড়ে শিকড়ে জমে টান
গঙ্গা এত বহমান দীর্ঘ দেশকাল জুড়ে আমারও হৃদয়
ধুলো পায়ে ফিরে বলে কোথায় আমার গোত্র
কী আমার পরিচয় মা?
ছুটে সরে যাই দূরে ঘরে পরে সদরে অন্দরে
কী আমার পরিচয় মা
শহরে ডকে ও গ্রামে ফুলে ওঠে পরিশ্রম গাছে ওড়ে রঙিন বেলুন
কী আমার পরিচয় মা
ধরো নদীতীর শোনো শব্দ যেন জমে ছিল জাহাজের সারি
জেটিতে জুটায় ভালোবাসা
টন টন শস্যে মুখ ঢেকে যায় রৌদ্রহীন শস্যের শরীর গলে যায়
কী আমার পরিচয় মা
পোশাকের নীচে আমি আমার ভিতরে জমে নির্বোধ পোশাক
আমার দেহের কোনো পরিত্রাণ থাক না-ই থাক
মুখে ঠিক উঠেছিল গ্রাস
কী আমার পরিচয় মা
দারুণ কুঠারে কেউ ছিঁড়ে দিয়েছিল দড়ি
দ্রুত খুলে যায় সব তরী
টেবিলে গেলাস রেখে উঠে আসে প্রণয়িনী হাত ভাঁজ করে বলে, এসো,
কনুই বাঁকিয়ে ওরা মিশে যায় ক্রিসমাস ভিড়ে
টুইস্ট টুইস্ট টুইস্ট
কিছুতেই কিছু নয় ললাটে না ভাষায় না
নতনীল বুকে কিছু নয়
আমার জিভের বিষে ঝরে যায় জরতী ভিখারি
সব গাড়ি থেমে থাকে রমণীর রক্তিম নখরে
কী আমার পরিচয় মা?
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন