জানতে ইচ্ছে করে
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
ওরা জঙ্গলে থাকে, কিন্তু জংলি মানুষ নয়
বাড়ি ঘর বানায়নি, অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে যখন তখন
ঠিক যেন গল্পের মতন, অথচ গল্প নয় মোটেই
রাত্তিরের দিকে বেরিয়ে আসে আচমকা জনপদে
অশরীরী নয়
সঙ্গে থাকে বোমা, বন্দুক আর ল্যান্ডমাইন, এ ছাড়া দেশলাই
হতভম্ব পুলিশদের ওরা উর্দি খুলে নেয়, অথবা উড়িয়ে দেয় মুন্ডু
কখনও দিনের আলোতেও ভাঙে জেলের গরাদ, বিপথে
ঘুরিয়ে দেয় ট্রেন
ওরা জঙ্গলে ফিরে যায়, কিন্তু জংলি মানুষ নয়
দুপুরবেলা ওরা কী খায়, খিচুড়ি না হতে গড়া রুটি
রোজই নিরামিষ, না কি মাঝে মাঝে ডিমসেদ্ধ বা চুনো মাছ জুটে যায়
জানতে ইচ্ছে করে, খুব জানতে ইচ্ছে করে
প্রত্যেকের কি একটাই প্যান্ট-শার্ট, না কি আরও কিছু থাকে গাছের কোটরে
দাড়ি কামায় না নিশ্চয়ই, নোখ বড় হলে তাও কি কাটে না
গান গায় মাঝে মাঝে? শুধু আদর্শের কথা নয়
চটুল রসের ইয়ার্কি
জানতে ইচ্ছে করে, খুব জানতে ইচ্ছে করে
ধরা যাক একদিন দেখা গেল, পান্তা আছে কিন্তু নুন নেই
তখন নুন ছাড়াই বিশ্বমানবতা হজম করা যায়
কেউ কি ঘুমের মধ্যে কথা বলে? কেউ একা হিসি করতে গিয়ে কাঁদে?
টিলার ওপাশে সূর্যাস্ত দেখে কেউ কি থমকে দাঁড়ায়
ঢুকে যায় মেঘের খুনখারাবি প্রাসাদে
ওরা যে ভবিষ্যতের কথা ভাবে, সেই পথ কতখানি লম্বা
ওরা কি জানে না, বিপ্লব তার প্রথম ব্যাচের সন্তানদের চিবিয়ে চিবিয়ে
খেয়ে ফেলে
আর দ্বিতীয় ব্যাচ বিপ্লবকে উলটো দিকে ঘুরপাক খাওয়ায়
আর যারা আড়ালে গিয়ে বাঁচে, তারা আত্মজীবনীতে কাটাকুটি
করে বারবার
ওরা জঙ্গলের প্রতিটি পাতার শব্দ চেনে, মেয়েদের কথা বুঝি
ঘুণাক্ষরেও মনে আনে না
অবশ্য দলে দুচারটি মেয়েও থাকে শুনেছি, তা নিয়ে বুঝি রেষারেষি নেই
নূতাতন্তু জালে কেউ জড়ায় না
জানতে ইচ্ছে করে, খুব জানতে ইচ্ছে করে
বান্দোয়ান, বেলপাহাড়ির ওই সব জঙ্গলে গেছি তো কতবার
আর যাওয়া হবে না, আমি আর সেই আমি নই
আমি আর আকাশের নীচে কখনও ঘুমোতে যাব না
তবু ওদের কথা এত মনে পড়ে কেন
যদি কানু সান্যাল বা অসীমের মতন ওরাও
কোনও একদিন বলে, আমরা ভুল করেছিলাম সেই সময়ে
সেদিন আর আমি বেঁচে থাকব না!
বাড়ি ঘর বানায়নি, অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে যখন তখন
ঠিক যেন গল্পের মতন, অথচ গল্প নয় মোটেই
রাত্তিরের দিকে বেরিয়ে আসে আচমকা জনপদে
অশরীরী নয়
সঙ্গে থাকে বোমা, বন্দুক আর ল্যান্ডমাইন, এ ছাড়া দেশলাই
হতভম্ব পুলিশদের ওরা উর্দি খুলে নেয়, অথবা উড়িয়ে দেয় মুন্ডু
কখনও দিনের আলোতেও ভাঙে জেলের গরাদ, বিপথে
ঘুরিয়ে দেয় ট্রেন
ওরা জঙ্গলে ফিরে যায়, কিন্তু জংলি মানুষ নয়
দুপুরবেলা ওরা কী খায়, খিচুড়ি না হতে গড়া রুটি
রোজই নিরামিষ, না কি মাঝে মাঝে ডিমসেদ্ধ বা চুনো মাছ জুটে যায়
জানতে ইচ্ছে করে, খুব জানতে ইচ্ছে করে
প্রত্যেকের কি একটাই প্যান্ট-শার্ট, না কি আরও কিছু থাকে গাছের কোটরে
দাড়ি কামায় না নিশ্চয়ই, নোখ বড় হলে তাও কি কাটে না
গান গায় মাঝে মাঝে? শুধু আদর্শের কথা নয়
চটুল রসের ইয়ার্কি
জানতে ইচ্ছে করে, খুব জানতে ইচ্ছে করে
ধরা যাক একদিন দেখা গেল, পান্তা আছে কিন্তু নুন নেই
তখন নুন ছাড়াই বিশ্বমানবতা হজম করা যায়
কেউ কি ঘুমের মধ্যে কথা বলে? কেউ একা হিসি করতে গিয়ে কাঁদে?
টিলার ওপাশে সূর্যাস্ত দেখে কেউ কি থমকে দাঁড়ায়
ঢুকে যায় মেঘের খুনখারাবি প্রাসাদে
ওরা যে ভবিষ্যতের কথা ভাবে, সেই পথ কতখানি লম্বা
ওরা কি জানে না, বিপ্লব তার প্রথম ব্যাচের সন্তানদের চিবিয়ে চিবিয়ে
খেয়ে ফেলে
আর দ্বিতীয় ব্যাচ বিপ্লবকে উলটো দিকে ঘুরপাক খাওয়ায়
আর যারা আড়ালে গিয়ে বাঁচে, তারা আত্মজীবনীতে কাটাকুটি
করে বারবার
ওরা জঙ্গলের প্রতিটি পাতার শব্দ চেনে, মেয়েদের কথা বুঝি
ঘুণাক্ষরেও মনে আনে না
অবশ্য দলে দুচারটি মেয়েও থাকে শুনেছি, তা নিয়ে বুঝি রেষারেষি নেই
নূতাতন্তু জালে কেউ জড়ায় না
জানতে ইচ্ছে করে, খুব জানতে ইচ্ছে করে
বান্দোয়ান, বেলপাহাড়ির ওই সব জঙ্গলে গেছি তো কতবার
আর যাওয়া হবে না, আমি আর সেই আমি নই
আমি আর আকাশের নীচে কখনও ঘুমোতে যাব না
তবু ওদের কথা এত মনে পড়ে কেন
যদি কানু সান্যাল বা অসীমের মতন ওরাও
কোনও একদিন বলে, আমরা ভুল করেছিলাম সেই সময়ে
সেদিন আর আমি বেঁচে থাকব না!
এখন পর্যন্ত কবিতাটি পড়া হয়েছে ১০৯ বার
যদি কবিতাটা সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন