একদিন ঘোর বর্ষার দিনে ছুটি-ছুটি ভাব দেখে
হলুদ রঙের কম্পিউটার ঘুম দিল নাক ডেকে।
ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখছে অ্যালজেব্রার ধাঁধা
হঠাৎ কে যেন বোতাম খুঁচিয়ে বলল, ওঠো তো দাদা!
হলুদ রঙের কম্পিউটার চোখ মেলে পাশ ফিরে
ছোট ভাইটিকে দেখে ধমকাল, কেন ঘুম ভাঙালি রে?
ছোট ভাই মিনি-কম্পিউটার নীল মুখ কালো করে
বলল, দাদা হে, ডেকেছি তোমায় বিষম বিপদে পড়ে!
একটা বাচ্চা ফুটফুটে মেয়ে নাম তার মধুবন
সকাল থেকেই করছে আমায় নিদারুণ জ্বালাতন।
সাত আর পাঁচে কত হয় তাকে বলতেই হবে আজ
এমন অঙ্ক জীবনে শুনিনি, নেই কোনো আন্দাজ!
থিটা-বিটা-গামা লগারিথমের সব কিছু জানা আছে
কিন্তু এটা কী? সাত-পাঁচ ভেবে এসেছি তোমার কাছে।
তাই শুনে মহা গর্জন করে বলল হলুদ, সাত?
আকাশে না জলে, তরল-কঠিন, আগে বল কোন জাত,
আর পাঁচ তার মাথায় না পায়ে, ফর্সা না কালো চাবি
এসব না জেনে প্রশ্ন করিস, একখানা চাঁটি খাবি?
প্যারাবোলা আর ইনফিনিটির জানি আগাপাশতলা
কী সাহস তোর আমার সামনে এলেবেলে কথা বলা?
এখনো বাচ্চা রইলি, কম্পু, শিখলি না ভদ্রতা
বড়দের কাছে বলা উচিত না, এসব ক্ষুদ্র কথা!
নীল-মিনি মাথা চুলকিয়ে বলে, আমি সাতে-পাঁচে নেই
বিচ্ছু মেয়েটা তবু যে আমায় ছাড়বে না কিছুতেই
হোমটাস্কের খাতা ফেলে উঠে আসছে বারংবার
দেখে যাই যদি আর দুই দাদা করে দেন উদ্ধার!
আর দুই দাদা মেগা ও সুপার, অতি জাঁদরেল তারা
কাছে আসতেই দপদপে লাল চোখ মেলে দিল সাড়া
কে আসে, কী চাই? পৃথিবী না চাঁদ, শুক্র না মঙ্গল?
মহাশূন্যের সঙ্গে আরেক শূন্যের যোগফল?
বলল কম্পু, অত কিছু নয়, শুধু পাঁচ আর সাত
শোনামাত্রই এল উত্তর লম্বা তিনশো হাত!
আরও কড়কড়, আরও ঘড়ঘড়, এবং ঘটাং ঘট
কাগজের ঢেউ দেখে নীল-মিনি সটান স্পিকটি নট!
মেগা যত বলে সুপার দ্বিগুণ, দু’জনের রেষারেষি
বোঝা সোজা নয় দুই পালোয়ান কে যে কার চেয়ে বেশি!
এমন সময় মধুবন এল দুলিয়ে মাথার চুল
হাসতে হাসতে বলল, কম্পু, আমারই হয়েছে ভুল।
সাত আর পাঁচে যোগ নাকি গুণ সেটাই দেখিনি আগে
সব অঙ্কটা ফের শুরু হবে, বলো তো কেমন লাগে?
পাঁচ কেন পাঁচ, সাত কেন সাত? বলো দেখি তাড়াতাড়ি
তা শুনে সবাই চুপ করে গেল, যেন সকলের আড়ি
মিনি ও হলুদ, মেগা ও সুপার চক্ষু রইল বুজে
লোডশেডিং-এর ধাক্কা! মেয়েটি তক্ষুনি গেল বুঝে।
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন