তুমি যে-সব ভুল করতে সেগুলো খুবই মারাত্মক ছিল।
তোমার কথায় ছিল গেঁয়ো টান,
অনেকগুলো শব্দের করতে ভুল উচ্চারণ
‘প্রমথ চৌধুরী’ কে তুমি বলতে ‘প্রথম চৌধুরী’;
‘জনৈক’ উচ্চারণ করতে গিয়ে সর্বদাই ‘জৈনিক’ বলে ফেলতে।
এমনি বহুতর ভয়াবহ ভুলে-ভরা ছিল তোমার ব্যক্তিগত অভিধান।
কিন্তু সে-সময়, সেই সুদূর কৈশোরে ঐ মারাত্মক ভুলগুলো
তোমার বড়-বেশি ভালোবেসে ফেলেছিলুম।
তোমার পরীক্ষার খাতায় সর্বদাই
সাধু ও চলতির দূষণীয় মিশ্রণ ঘটাতে।
ভাষা-ব্যবহারে তুমি বরাবরই খুব অমনোযোগী ছিলে।
বেশ হাবাগোবা গোছের লাজুক ও অবনতমুখী মেয়ে ছিলে তুমি।
‘শোকাভিভূত’ বলতে গিয়ে ব’লে ফেলতে ‘শোকাভূত’।
তোমার উচ্চারণের ত্রুটি, বাক্যমধ্যস্থিত শব্দের ভুল ব্যবহারে
আমি তখন এক ধরনের মজাই পেতুম।
২০-বছর পর আজ তোমার বক্তৃতা শুনলুম।
বিষয় ‘নারী-স্বাধীনতা’!
এত সুন্দর, স্পষ্ট ও নির্ভুল উচ্চারণে তোমার বক্তব্য রাখলে যে,
দেখে অবাক ও ব্যথিত হলুম।
আমার বুকের মধ্যে জেঁকে-বসা
একটি পাথর বিশ বছর পর নিঃশব্দে নেমে গেল।