হিমাংশুর স্ত্রীকে
নির্মলেন্দু গুণ
আমাকে বিশ্বাস নেই হিমাংশু, কোনো কিছুতেই কোনো কিছু না পাওয়ার ক্লিন্ন অবসাদ আমার শরীরময় পাপ; স্বপ্ন যদি আমার অনুভবে জনতার বিপ্লবের কথা বলে, দুঃস্বপ্ন আমার রক্তে কণায়-কণায় অন্য এক প্লাবনের গান গেয়ে যায়। মুখের গোলাপ যদি সূর্যালোকে স্বর্ণের মতো ফোটে, বুকের গোলাপ তখন গায়ে কাদা মেখে যন্ত্রণায় নীল হয়ে কাঁদে। আমি যখন ঘুমোতে যাই, তখন শয্যাময় লুকানো দুঃস্বপ্ন এসে আমাকে জড়ায়। আমি জনতার শত্রুকে গুলিবিদ্ধ করে পুলিশের তাড়া খেয়ে রাত্রির অন্ধকারে যখনই পালাতে যাই, তখনই তোমার স্ত্রীকে পাই প্রতিদিন, আমার মঙ্গলময় পথের সিদ্ধান্তে সে এসে আগলে দাঁড়ায় সমুখের সকল গন্তব্য; সজ্ঞানে ডিঙাতে গেলেই আমার অজ্ঞান দেহ বাঁধা পড়ে তার আলিঙ্গনে। আমি সব কিছু ভুলে যাই, আমাকে বিশ্বাস নেই হিমাংশু, আমি কোনো কিছুতেই কোনো কিছু না-পাওয়ার অভিমানে একজন জলজ্যান্ত পাপ, খাপহীন তলোয়ার নিয়ে আমরা দু’জন তাই গতকাল সারারাত ধরে যে-যুদ্ধের শরীর দেখেছি, সেখানে স্পষ্টত জীবন থেকে যৌবন, স্বপ্ন থেকে দুঃস্বপ্ন, সিদ্ধান্ত থেকে গন্তব্য, গন্তব্য থেকে আলো; খণ্ডিত বাঙলার মতো যেন চিরকাল মীমাংসিত সত্যে আলাদা।
এখন পর্যন্ত কবিতাটি পড়া হয়েছে ৬৫ বার
যদি কবিতাটা সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন