অন্ধকার মরণের ছায়
কতকাল প্রণয়ী ঘুমায়?—
চন্দ্রাপীড়, জাগ এইবার।
বসন্তের বেলা চলে যায়,
বিহগেরা সান্ধ্যগীত গায়,
প্রিয়া তবু মুছে অশ্রুধার।
মাস, বর্ষ হ’ল অবসান,
আশা-বাঁধা ভগ্ন পরাণ
নয়নেরে করেছে শাসন,
কোনদিন ফেলি অশ্রুজল,
করিবে না প্রিয়-অমঙ্গল—
এই তার আছিল যে পণ।
আজি ফুল মলয়জ দিয়া,
শুভ্র-দেহা, শুভ্রতর দিয়া,
পূজিয়াছে প্রণয়ের দেবে ;
নবীভূত আশারাশি তার,
অশ্রুমালা শোনে নাকো আর—
চন্দ্রাপীড়, মেল আঁখি এবে।
দেখ চেয়ে, সিক্তোত্পল দুটি
তোমা পানে রহিয়াছে ফুটি,
যেন সেই নেত্র-পথ দিয়া,
জীবন, তেয়াগি নিজকায়,
তোমারি অন্তরে যেতে চায়—
তাই হোক্, উঠ গো বাঁচিয়া।
প্রণয় সে আত্মার চেতন,
জীবনের জনম নূতন,
মরণের মরণ সেথায়।
চন্দ্রাপীড়, ঘুমা’ও না আর—
কানে কানে কে কহিল কার,
আঁখি মেলি চন্দ্রাপীড় চায়।
মৃত্যু-মোহ অই ভেঙ্গে যায়,
স্বপ্ন তার চেতনে মিশায়,
চারি নেত্র শুভ দরশন
একদৃষ্টে কাদম্বরী চায়,
নিমেষ ফেলিতে ভয় পায়—
“এতো স্বপ্ন—নহে জাগরণ।”
নয়ন ফিরাতে ভয় পায়,
এ স্বপন পাছে ভেঙ্গে যায়,
প্রাণ যেন ওঠে উথলিয়া।
আঁখি দুটি মুখ চেয়ে থাক্,
জীবন স্বপন হয়ে যাক্,
অতীতের বেদনা ভুলিয়া।
“আধেক স্বপনে, প্রিয়ে,
কাটিয়া গিয়াছে নিশি,
মধুর আধেক আর
জাগরণে আছে মিশি ;”
“মরণে অবসানে
জীবন জনম প্রায়।”
“জীবন?—জীবন, প্রিয়?
নহি স্বপনের মোহ?
মরণের কোন্ তীরে
অবতীর্ণ আজ দোঁহে?”

০
০
সেভ বা রিয়েক্ট করার জন্য লগইন করে নিন!
৩৯৬
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন