সন্ধ্যা থেকে কদম আলী অপেক্ষা করছে।একটি টঙ দোকানে চা সিগ্রেট চলছে।কিন্তু বেশি দেরি হলে সমস্যা।লালু ফোনটাও ধরছে না।আজ রাতের মধ্যে কন্টাক্ট হতেই হবে।লাল্লু যখন এলো কদম আলীর ৭ টা দিগ্রেট শেষ, ৮ নম্বর সিগ্রেট ধরাতেই লালুর মিস কল।লালু দাঁড়িয়ে আছে সামান্য দূরে একটা কড়ই গাছের তলায়।ওখানেই থাকবার কথা।কদম আলী ধীর লয়ে হেঁটে কড়ইতলায় এলো।
-কিরে দেরি কেনো!
ইচ্ছে করেই দেরি করলাম।একটু দেরি করাই আমাগো নিয়ম।নিরাপদ।
-দেরি না কইরা কাজের কথা সাইরা ফালাই।কি কছ?
হ। কও। যা কইবা কইয়া ফালাও।
কদম আলী পুরো প্ল্যান লালুকে বুঝিয়ে দেয়।পকেট থেকে একটা বান্ডিল বের করে কদম আলী লালুর হাতে দেয়।লালুর বাম হাতে একটা বাজারের ব্যাগ।ব্যাগের ভিতর ১০ কেজি রুই মাছ।লালু এদিক-সেদিক তাকিয়ে টাকার বান্ডিলটা মাছের ব্যাগে কায়দা করে ঢুকিয়ে যেদিক থেকে আসছিলো তার উলটোদিকে অদৃশ্য হয়ে যায়।
কদম আলী পরচুলা খুলে ব্যাগে ভরে চট করে ওখান থেকে সরে পড়ে।কদম আলী কোন দিকে যাচ্ছে সেদিকে তাকানোর সময় লালুর নেই।সে তড়িঘড়ি করে একটা লোকাল বাসে উঠে উধাও হয়ে যায়।
পরদিন রাতে লালু আর তার টিম ঢাকা গাজিপুর নারায়নগঞ্জসহ সাভারের অসংখ্য মন্দিরে লুটপাট করে আগুন ধরিয়ে দিলো।এই ঘটনায় সারা দেশ কেঁপে উঠলো।বিভিন্ন এলাকায় হিন্দু মুসলমানের মধ্য শুরু হলো সংঘর্ষ।বেশ কয়েকজন নিহত আর আহত হলো শতাধিক।রহিমা বহির্বিশ্বকে বুঝিয়ে দিতে চাইলো যে বাংলাদেশের সরকার সাম্প্রদায়িকতা উস্কে দিয়েছে।এখানে সংখ্যালঘুরা নিরাপদ নয়।
ঘটনার তিনদিন পর সংখ্যালঘুর উপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে রহিমা বেগম প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দেয়।প্রতিবাদ মিছিলে কী করতে হবে এই বিষয়ে কদম আলীকে ব্রিফ দেয়ার জন্য রহিমা গাড়ি নিয়ে চলে আসে ৭/এ কদম আলী ভিলা।
কদম আলীর কদমবুসি আর রহিমার সোফায় বসার পর্ব শেষ হলে রহিমা বলে – আগামীকাল প্রতিবাদ মিছিলে যেভাবেই হোক দুই তিনটা লাশ ফেলে দিতে হবে।
কদম আলী বলে – কিন্তু…
– না কোনো কিন্তু টিন্তু নয়।সোজা আংগুলে ঘি উঠাতে আমি বিশ্বাসী নই। আমার আংগুল অলওয়েজ বাঁকা।লাশ আমার লাগবেই।
কদম দেখতে পায়- রহিমার চোখ দুইটি যেনো রক্তপানের জন্য চিকচিক করে উঠছে প্রচন্ড জিঘাংসা নিয়ে,যেনো ফেটে পড়তে চাইছে তীব্রতম উল্লাসে!
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন