মোঃ জুনাইদ তালুকদার

কবিতা - আছিয়ার আর্তনাদ: এক সমাজের কলঙ্ক

লেখক: মোঃ জুনাইদ তালুকদার

তুমি কি শুনতে পাও,
রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে,
একটা অবুঝ কণ্ঠ কাঁপছে,
একটা প্রাণ থরথর করে কাঁপছিল,
একটা মেয়ে বাঁচতে চেয়েছিল,
কিন্তু সমাজ বলল— “তুই বাঁচতে পারবি না!”

তিনটা নরপিশাচ,
একটা ফুলকে ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করল,
তার স্বপ্নগুলোর গায়ে আগুন ধরাল,
তার শরীরটাকে বানাল এক নিষ্ঠুর যুদ্ধক্ষেত্র,
যেখানে শুধু যন্ত্রণা, শুধু তীব্র আর্তনাদ!

তার বুক চিরে,
তার শ্বাস বন্ধ করে,
তার মুখে ফেনা তুলে দিয়ে,
তারা হাসল— “কেউ জানবে না!”
কিন্তু আকাশ জানল, বাতাস জানল,
তার প্রতিটি আর্তনাদ জমা আছে বাতাসের প্রতিটি স্তরে!

তার শরীরের প্রতিটি কোণায় ছিল ব্যথার চিহ্ন,
তার ফেনায় ভেজা ঠোঁট জানত,
কিভাবে সমাজ বুক চেপে ধরে,
কিভাবে ন্যায়বিচারের নামে করা হয় প্রতারণা,
কিভাবে অন্যায় মাথা উঁচু করে হাসে।

তার মা কেঁদে বলেছিল—
“ও বেঁচে থাকলে সমাজ কি বলবে?”
তাই সমাজ নিশ্চিন্ত,
আজ আছিয়া আর নেই!
তাকে আর মুখ ঢাকতে হবে না,
তাকে আর সমাজের সামনে দাঁড়াতে হবে না,
সে তো মরে গিয়ে বেঁচে গেছে,
কলঙ্কের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে!

কিন্তু সমাজ কি মুক্ত?
কতগুলো নরপিশাচ এখনও ঘুরে বেড়ায়,
নতুন কোনো আছিয়াকে শিকার করার অপেক্ষায়!
তারা জানে, বিচার নেই, শাস্তি নেই,
ক’দিন পর সব ভুলে যাবে লোকজন,
তারা আবার ফিরবে আগের মতো,
নতুন শিকারের খোঁজে!

কিন্তু এবার আর না!
এই আগুন এবার নেভানো যাবে না!
এই ধিক্কার থামানো যাবে না!
আমরা বিচার চাই,
আমরা প্রতিশোধ চাই,
আমরা এমন শাস্তি চাই,
যাতে আর কোনো হায়েনার জন্ম না হয়,
যাতে আছিয়ার আত্মা আর্তনাদ না করে,
যাতে সমাজ মুখ লুকাতে বাধ্য হয়!

আছিয়া, তোমার কান্না আমরা শুনেছি,
তোমার লাশের নীরবতা আমাদের রক্তে আগুন জ্বালিয়েছে,
এইবার তোমার গল্প চাপা পড়বে না,
এইবার সমাজ শিখবে,
কীভাবে বাঁচতে হয়,
কীভাবে মানুষ হতে হয়!

এখন পর্যন্ত লেখাটি পড়া হয়েছে ২৪ বার
যদি লেখাটি সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন