রাত শেষ। এখন ভোরের সাথে সাথে মানুষও জেগে উঠবে। গিজগিজ করবে গিরগিটির মতো রাস্তাঘাটে। পৃথিবীর বুকে এখন বৃক্ষের থেকে মানুষ বেশি। অথচ এর উল্টোটা অনুকূল। কোথাও ডাহুক পাখি ডেকে উঠলো। সারারাত সেও দিলুর মতোই একটু পর পর এরকম করুণ সুরে ডেকে উঠেছে।
দিলু সাদা শাড়ির আঁচলে চোখ মুছতে মুছতে বাড়ি ফিরছে। এখন মানুষ জেগে ওঠার আগেই সমস্ত নালিশ আঁচল বন্দি করে ঘরে না ফিরলে আমাদের সমাজ আসর বসাবে তাকে নিয়ে।
ষোল বছর বয়সে ভালোবেসে বিয়ে। ভাগ্য তাকে সতেরো বছর বয়সেই বিধবা করেছে। রোজ রাতগভীরে দিলু বাড়ির পাশের গোরস্থানে অণুর কবরের পাশে গিয়ে বসে থাকে। সারাদিনের অভিযোগ কেঁদে কেঁদে অণুকে শোনাবার চেষ্টা করে। কিন্তু ও জানে না কবর থেকে অণু ঠিক ওর অভিমান অভিযোগগুলো শুনতে পায় কি না!
মসজিদ থেকে মোয়াজ্জিম কাকা আজও দেখলো দিলুকে চোখ মুছতে মুছতে বাড়ি ফিরতে। মনের অজান্তেই তিনিও রবের কাছে প্রার্থনা করলেন- \\\” হে রব, ওদের দুজনকেই ক্ষমা করে দাও \\\”।
আমিও রোজকার মতো দিলুকে জানালা দিয়ে দেখতে পেলাম। কলম তুলে নিলাম কিছু লিখার জন্য। অথচ কলমে কোনো শব্দ নেই। একগাদা কালিতে সাদা কাগজের অনেকখানি লেপটে গেল। এ যেন সমাজের সব থেকে নোংরা কালি।
১৫৮

মন্তব্য করতে ক্লিক করুন