এই আমি, আমার সমস্ত জিজ্ঞাসা নিয়ে পথ চলেছি হাজার বছর ধরে
জীবনানন্দ-সুধীন-বিষ্ণুর কবিতার সুদীর্ঘ নগরে….
তবুও তোমার সাথে এতকাল আমার
কেন দেখা হলো না? কেন এই নাদেখা বারবার!
যে তুমি আমার একান্ত ইচ্ছার ফসল
স্বপ্নের আদলে গড়া জীবনের আদল!
তোমার সে সাকুল্য বসন্তের মুখরা মুখের ফুল-হাসি মধুর
দাদখানি কথা, তাবৎ লয় ও সুর
অতল দুচোখের শিশিরের মতো ছলছল জল
ফোঁটাফোঁটা টলমল…..
কেন দেখা হলো না?
কেন পাওয়া গেল না!
আর কতদূরে যেতে হবে!- ‘কোন নীপবনের ছায়াবিথী তলে’!
কোন থৈ-থৈ ‘নবধারাজলে’!
আরো দূরে কোন গমক্ষেত আগ্রাসী নিলীমার!
কিংবা মৌ-মৌ ক্ষেত সরিষার!
বল, আর কতদূরে কতকাল ধরে…
যেতে হবে কোন অতীতের কোন শ্রাবস্তি নগরে
কোন ইতিহাসের কোন যুগের অদৃশ্য পারে
কোন আদিম নিঃসীম অন্ধকারে?
আমি তো ভ্যানগগ, দ্য ভিঞ্চির ম্যাডোনার শরীরে
রঙের ভেতরে আরো গভীরের গভীরে
করেছি কেবল ইলেক্ট্রিক ভ্রমণ
আহা! কতদিন, কতক্ষণ!
তবুও কেন তোমার সাথে দেখা হলো না আমার?
আজ তাই, চারিদিকে কেবলই কী নাই! কী নাই! আহাকার!
আমি যে আজ কেবলই ক্লান্তি-বিধুর…….
বলো, আমাকে আর যেতে হবে কতদূর?
আমি যে কবিতার সপ্ত-আসমান ফুঁড়ে
রোহিণীদের মহল্লায়, আরো দূরে সঙ্গীতের ভুবন জুড়ে
করেছি সুরের ভ্রমণ তানসেনি ঢঙে বহুবার
তবু কেন তোমার সাথে দেখা হলো না আমার?
ধীরেধীরে বয়স-ক্লান্ত শরীরটা তামাটে হয়ে গেল
বাক-টীথ হারিয়ে গেল, কালো চুল কত সাদা হলো!
তবুও কি স্বপ্নেরা বুড়ো হয়ে যাবে না?
জানি তোমার সাথে আর দেখা হবে না…..
শুধু শান্তনা এইটুকু বুঝি-
স্বপ্নের ভেতরে কেবল স্বপ্নকে পুঁজি
করে তোমাকে খুঁজেছি বহুবার বহু বিচিত্র পথেপথে
বহু বিচিত্র হাওয়াই জগতে!
শান্তনা তবু আমার-
আমি দেখেছি যে তোমার
স্বপ্নময় অধিক সরল-গরল
তোমার মায়াবী জ্যোৎস্নার উপরি-অতল
বিদিশার ব্লাক-হোল রূপী দীঘল নিশা…….
এই জীবনে পাওয়া হলো না কেবল তোমার দিশা;
পেশীময় দিনমান এক দিশা।
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন