শক্তি চট্টোপাধ্যায়

কবিতা - মৃত্যুর পরেও যেন হেঁটে যেতে পারি

শক্তি চট্টোপাধ্যায়

(শান্তিরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মৃতির প্রতি)

মানুষের মৃত্যু হলে মানুষের জন্য তার শোক
পড়ে থাকে কিছুদিন, ব্যবহৃত জিনিসেরা থাকে
জামা ও কাপড় থাকে, ছেঁড়া, জুতো তাও থেকে যায়
হয়তো বা পা-দুখানি রাঙা হলে পদচ্ছাপ থাকে
অনুপস্থিতি আর মরা পদচ্ছাপ রেখে ওরা
যাদের পিছনে ফেলে দিয়ে গেলে, তারা মনে করে
তোমার স্বভাবস্মৃতি তোমার ভালোর সীমাহীন
তোমার সমগ্র নিয়ে আলোচনা হয় না কখনো
হতেও পারে না বলে মনে হয়, হতে পারে নাকি?
মৃত্যুর দুদিন আগে তোমাকে কী সুন্দর দেখালো!
গল্প বলেছিলে বটে, আর কোনো কাজ বাকি নেই ঋণ নেই
কারো কাছে, পাওনা নিয়ে করিনি তদবির
আমি সুখী, তুমি জানো সুখ কাকে বলে?
সুখ সেই বিষণ্ণতা যে আমার কোলে বসে থাকে
অনন্যা একাকী কন্যা সেও তার নিজস্ব গৃহের
বারান্দায় বসে থাকে রাজার পুত্রের খেলাঘরে
তারো কাছে আমি এক বাতিল বাবার
স্মৃতি ছাড়া কিছু নয় অতীতের বিঘ্নও মধুর!
নিজেকে সরিয়ে নিতে আজ, পূর্ণ আছি বলে
জানিনা কখনো যদি পূর্ণতায় ইঁদুরের দাঁত
চাম কেটে বসে আর ফুটো করে বালিশ
তাহলে উজ্জ্বল তুলো বাতাস ভাসাবে
পঙ্গু অনর্থক দিন বৃথা চলে যাবে
দক্ষিণ দুয়ারে এসে দাঁড়াবে নির্ঘাৎ
চতুর্দোলা নিয়ে যম—
অপমান লাগে…
মৃত্যুর পরেও যেন হেঁটে যেতে পারি।।

২৬
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন