দেবব্রত সিংহ

কবিতা - রুখে দাঁড়া

লেখক: দেবব্রত সিংহ

মেয়েটি বললে, আমি বিষ খাব স্যার,
আমার আর ইচ্ছে করছে না বাঁচতে।
আমি শুধালাম, কি হয়েছে তোমার
সাতসকালে এসব কি বলছ তুমি।
মেয়েটি বললে, সত্যি বলছি স্যার,

আমার আর একফোঁটাও ইচ্ছে নেই বাঁচার।
আমি খুব উদ্বিগ্ন হয়ে শুধালাম, কি হয়েছে তোমার বলবে তো।
মেয়েটি বললে, মায়ের বয়সী এক মহিলাকে উলঙ্গ করে
চারজন ছেলে মিলে– –
আর বলতে পারবো না স্যার
নামতে নামতে কত নিচে নেমে গেছে সমাজটা দেখুন
আমার আর ইচ্ছে করছে না বেঁচে থাকতে,
যেখানে মানুষ হয়ে বেঁচে থাকার জায়গা নেই
সেখানে শুধু মেয়ে হয়ে বেঁচে থাকতে
আর একটুও ইচ্ছে করছে না আমার ।
আমি বললাম, তুমি পাথর খাদানের মঙলিকে জানো
“মঙলির কথা” মনে আছে তোমার।
মেয়েটি বললে, এখন আর মনে পড়ছে না কিছুই
কারো কথাই মনে পড়ছে না,
সব কেমন তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে মাথার মধ্যে
এখন শুধু একটাই রাস্তা খোলা আছে সামনে
প্রতিবাদের শুধু একটাই রাস্তা খোলা আছে আমার।
আমি বললাম, শোনো, পাথরখাদানের মঙলির ও
মনে হয়েছিল তাই,
পাহাড়ী নদীর জলে ডুবে বাঁচার যত সাধ আহ্লাদ
সব এক নিমেষে নিঃশেষ করে দিতে চেয়েছিল সে,
পারেনি,
তাকে থামিয়ে দিয়েছিল নদী,
নদী বলেছিল, এই মঙলি,
মরে গেলে তো হারে গেলি
জল থাকে মাথা খাড়া করে উঠ
ই পাথরখাদানের মাটি আর গাঁ গেরামের মাঝে
বাবু আর বেনিয়াদে ব্যাওসার ফাঁদ থাকে
আরো হাজার হাজার লাখ অ লাখ অ
মঙলিকে পাহারা দিবার লাগে
তীর কাঁড় আর টাঙ্গি হাতে
সদদারের পারা তুই যা
রুখে দাঁড়া মঙলি
রুখে দাঁড়া ।

এখন পর্যন্ত লেখাটি পড়া হয়েছে ২৯৭ বার
যদি লেখাটি সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন