স্বাধীনতা
দেবব্রত সিংহ
কথাটা ত মিছা লয়
লালগড়ের জঙ্গলমহলের সবাই জানে
ডুমুরগড়্যা, বেণাচাপড়া, বাঁকিশোল,হাতিঘোসা,শালডাঙ্গা
মোহনপুর, কলাইমুড়ির জানে সবাই
দিনের বেলা পুলিশ
রাতের বেলা উয়ারা,
পুলিশ বলে স্বাধীনতা
উয়ারা বলে মিছাকথা
ফের পুলিশ বলে স্বাধীনতা
ফের উয়ারা বলে মিছা কথা,
আমরা গরীব মানুষ
আমরা গো মুখখু মানুষ
খিদা বুঝি তিলষা বুঝি
ইসবের ত কিছু বুঝি নাই,
তবু দিনের বেলা পুলিশ আসে,
“হপন আছিস?”
হঁ আইজ্ঞা আছি
আমি হপন মান্ডি
বাপ তিলকা মান্ডি।
রাতের বেলা জঙ্গলমহলে রাত নামলে
আমার তালপাতায় ছাওয়া মাটির ঘরে
জুমড়াকাঠের আংরার পারা অন্ধকার
কপাট ও নাই হুড়কাও নাই
তখন উয়ারা আসে
কমরেড হপন আছো?
বলি হঁ আইজ্ঞা আছি
আমি হপন মান্ডি
বাপ তিলকা মান্ডি।
এমনি করে দিন কাটে
এমনি করে রাত কাটে
ইয়ার মাঝে গেলবছরে
বাঁকিশোলের কালভাট গেল বোমা তে উড়ে
তখন আমি খাটতে গেছি খড়গপুরের মুরগি খামারে
দিনটা ছিল বাবুদে পতকা তুলার দিন
আমরা হাভাতা মানুষ
আমরা গো মুখখু মানুষ
খিদা বুঝি তিলষা বুঝি
পতকা ত বুঝি নাই
তাই ভাল্যে ভাল্যে দেখছিলম
কিরম তিরঙ্গা পতকা তুলছে বাবুরা
খড়গপুরের টাউনের বাবু
দেখতে দেখতে পুলিশ গাড়ি,
পুলিশ বললেক, তোর নাম কি?
বললম, হপন মান্ডি
বাপ তিলকা মান্ডি।
গাঁ?
বেণাচাপড়া।
বলক?
লালগড় জঙ্গলমহল।
বললেক, আর বলতে হবেক নাই চল চল।
বলি যাব অ কুথাকে?
বললেক,লক আপে।
সেটা কী বঠে আইজ্ঞা?
সে তুই বুঝে যাবি থানাতে গেলেই বুঝে যাবি।
ই বাবা আমি হপন মান্ডি হে
গরিব মানুষ
খিদা বুঝি তিলষা বুঝি
উসবের ত কিছু বুঝি নাই।
মারাংবুরুর কিরা কাড়্যে বলছি
হাঁ দেখ অ বোমা যে কী জিনিস বঠে
বাপের কালে সেটা চোখে দেখি নাই।
বলতে বলতে আমার লাঙ্গল চষা আঁকল পরা হাতে
লুহার বেড়ি দিলেক পরাই
তারপরে ঘাড়ে ধরে ধাঁকালে জিবগাড়িতে দিলেক ভরে,
গাড়ির ভিতরে বন্দুকের নল ঠেকাই ইপাশে পুলিশ উপাশে পুলিশ
তার মাঝে আমি হপন মান্ডি
বাপ তিলকা মান্ডি।
দিনটা ছিল বাবুদে পতকা তুলার দিন
থানায় তখন পতকা তুলছে দারগাবাবু
আমরা গরীব মানুষ
আমরা গো মুখখু মানুষ
খিদা বুঝি তিলষা বুঝি
ইসবের ত কিছু বুঝি নাই
তাই শুদাইছিলম,
ইটা কী বঠে আঁইজ্ঞা?
এই পতকা জিনিসটা কি বঠে?
পতকা তুললে কী হবেক আমাদে?
মাত্তক এইটুকুন কথা
মাইরি বলছি,
সেই কথা শুনে কি বলব
ভেড়ার পালে যেমনি হামলে পড়ে নেকড়া হুঁড়াল
তেমনি করে আমার ঘাড়ের উপরে
হামলে পড়লেক দারগাবাবু
তা বাদে বুট জুতা পরা পায়ে
এমন একটা গড়ারি দিলেক মারে
আমি মু থুবড়াই গেলম পড়্যে
বললেক,
তুই জানিস নাই
তুই শুনিস নাই
শা-লা
ইটাই তো স্বাধীনতা
ইটাই তো স্বাধীনতা ।
আমি হপন মান্ডি
বাপ তিলকা মান্ডি
আমরা গরীব মানুষ
আমরা গো মুখখু মানুষ
খিদা বুঝথম
তিলষা বুঝথম
ইবার বুঝলম
কাকে বলে স্বাধীনতা
কাকে বলে মিছা কথা
কাকে বলে স্বাধীনতা
কাকে বলে মিছা কথা ।
লালগড়ের জঙ্গলমহলের সবাই জানে
ডুমুরগড়্যা, বেণাচাপড়া, বাঁকিশোল,হাতিঘোসা,শালডাঙ্গা
মোহনপুর, কলাইমুড়ির জানে সবাই
দিনের বেলা পুলিশ
রাতের বেলা উয়ারা,
পুলিশ বলে স্বাধীনতা
উয়ারা বলে মিছাকথা
ফের পুলিশ বলে স্বাধীনতা
ফের উয়ারা বলে মিছা কথা,
আমরা গরীব মানুষ
আমরা গো মুখখু মানুষ
খিদা বুঝি তিলষা বুঝি
ইসবের ত কিছু বুঝি নাই,
তবু দিনের বেলা পুলিশ আসে,
“হপন আছিস?”
হঁ আইজ্ঞা আছি
আমি হপন মান্ডি
বাপ তিলকা মান্ডি।
রাতের বেলা জঙ্গলমহলে রাত নামলে
আমার তালপাতায় ছাওয়া মাটির ঘরে
জুমড়াকাঠের আংরার পারা অন্ধকার
কপাট ও নাই হুড়কাও নাই
তখন উয়ারা আসে
কমরেড হপন আছো?
বলি হঁ আইজ্ঞা আছি
আমি হপন মান্ডি
বাপ তিলকা মান্ডি।
এমনি করে দিন কাটে
এমনি করে রাত কাটে
ইয়ার মাঝে গেলবছরে
বাঁকিশোলের কালভাট গেল বোমা তে উড়ে
তখন আমি খাটতে গেছি খড়গপুরের মুরগি খামারে
দিনটা ছিল বাবুদে পতকা তুলার দিন
আমরা হাভাতা মানুষ
আমরা গো মুখখু মানুষ
খিদা বুঝি তিলষা বুঝি
পতকা ত বুঝি নাই
তাই ভাল্যে ভাল্যে দেখছিলম
কিরম তিরঙ্গা পতকা তুলছে বাবুরা
খড়গপুরের টাউনের বাবু
দেখতে দেখতে পুলিশ গাড়ি,
পুলিশ বললেক, তোর নাম কি?
বললম, হপন মান্ডি
বাপ তিলকা মান্ডি।
গাঁ?
বেণাচাপড়া।
বলক?
লালগড় জঙ্গলমহল।
বললেক, আর বলতে হবেক নাই চল চল।
বলি যাব অ কুথাকে?
বললেক,লক আপে।
সেটা কী বঠে আইজ্ঞা?
সে তুই বুঝে যাবি থানাতে গেলেই বুঝে যাবি।
ই বাবা আমি হপন মান্ডি হে
গরিব মানুষ
খিদা বুঝি তিলষা বুঝি
উসবের ত কিছু বুঝি নাই।
মারাংবুরুর কিরা কাড়্যে বলছি
হাঁ দেখ অ বোমা যে কী জিনিস বঠে
বাপের কালে সেটা চোখে দেখি নাই।
বলতে বলতে আমার লাঙ্গল চষা আঁকল পরা হাতে
লুহার বেড়ি দিলেক পরাই
তারপরে ঘাড়ে ধরে ধাঁকালে জিবগাড়িতে দিলেক ভরে,
গাড়ির ভিতরে বন্দুকের নল ঠেকাই ইপাশে পুলিশ উপাশে পুলিশ
তার মাঝে আমি হপন মান্ডি
বাপ তিলকা মান্ডি।
দিনটা ছিল বাবুদে পতকা তুলার দিন
থানায় তখন পতকা তুলছে দারগাবাবু
আমরা গরীব মানুষ
আমরা গো মুখখু মানুষ
খিদা বুঝি তিলষা বুঝি
ইসবের ত কিছু বুঝি নাই
তাই শুদাইছিলম,
ইটা কী বঠে আঁইজ্ঞা?
এই পতকা জিনিসটা কি বঠে?
পতকা তুললে কী হবেক আমাদে?
মাত্তক এইটুকুন কথা
মাইরি বলছি,
সেই কথা শুনে কি বলব
ভেড়ার পালে যেমনি হামলে পড়ে নেকড়া হুঁড়াল
তেমনি করে আমার ঘাড়ের উপরে
হামলে পড়লেক দারগাবাবু
তা বাদে বুট জুতা পরা পায়ে
এমন একটা গড়ারি দিলেক মারে
আমি মু থুবড়াই গেলম পড়্যে
বললেক,
তুই জানিস নাই
তুই শুনিস নাই
শা-লা
ইটাই তো স্বাধীনতা
ইটাই তো স্বাধীনতা ।
আমি হপন মান্ডি
বাপ তিলকা মান্ডি
আমরা গরীব মানুষ
আমরা গো মুখখু মানুষ
খিদা বুঝথম
তিলষা বুঝথম
ইবার বুঝলম
কাকে বলে স্বাধীনতা
কাকে বলে মিছা কথা
কাকে বলে স্বাধীনতা
কাকে বলে মিছা কথা ।
এখন পর্যন্ত কবিতাটি পড়া হয়েছে ১৫৫ বার
যদি কবিতাটা সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন