আতাউর রাহমান

মা,সেদিন বিদায় নিলাম যখন,
আঁচলে মুখ লুকায়েছিলে তখন।
বলেছিলে,”যাচ না-রে খোকা পরদেশে!
যা হবার তা এই দেশেই হবে।
আমি হেসে বলেছিলাম,”ফিরে আসবো,
স্বপ্ন ভরে,সোনার কাঠি আনবই যে-রে,
কষ্ট কিছুই ছুঁবে না,মা তোরে।”

মা,রাত কাটে মোর যন্ত্রের সাথে,
দিন কাটে যে ধূলোতে মেখে।
ভোর আসে না পাখির ডাকে,
সূর্য ওঠে নিঃস্বার্থ পাথে।
জানিস মা,এখানে মানুষ আছে,
কিন্তু মায়ার তো পাইনা দেখা,
নির্বাক শহর,অচেনা ভাষা,
হারিয়ে ফেলিছি হৃদয়ে,
জাগা সকল স্বপ্ন আশা।

তোর রান্না ঘরের সেই গন্ধটা,
এখনও মনের মাঝে জেগে ওঠে,
ভেজা ভাতে আলুর ভর্তা,
তোর হাতের আদর মা,
পাবো বল, কোন খানে আর।
কতদিন তোর চিঠি আসেনি মা,
ডাকপিয়নের পথ যে চেয়ে,
ঘুম তো আর আসে না-রে ।
মুঠোফোনে বলি “ভালো আছি”,
তবু চোখ ভিজে মোর,
কেমনে তা লুকিয়ে রাখি।

পয়সা জমে,সুখ জমে না মোর,
বিদেশি মুদ্রায় প্রাণের খোরাক,
জোটে না- তো আর,
চোখের জলে পাথর ভাঙায়,
তোর হাসিমুখ স্বপনে দেখায়।
তুই বলেছিলি,“চিঠি লিখিস খোকা,
সময় কই!মন মানে না যে আর,
কেমনে মা,তা তোরে বোঝাই,
আজ এতদিন পর লিখছি চিঠি,
ভাঙা বুকের সকল ব্যথা,
আজ, দেয় যে উঁকি।

ফিরবো একদিন,এই প্রতিশ্রুতিতে,
দূর প্রবাসে বেঁচে থাকি,
সোনার বাংলায় তোর কোলে মা,
শেষ ঘুম ঘুমোতে আমি রাজি।
অপেক্ষা কর মা,আমি আসছি,
এই প্রবাস ছাড়ি,
তোর মমতার তুলনা নাই বা করি,
আমি যে তোর প্রবাসে থাকা “মা,
সাত রাজার ধন,আদরের কড়ি।

৯৪
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন