দু-একটা দিন বাঁচব আমি, সবাই ভালো থেকো,
না থাকলেও যদি পারো আমায় মনে রেখো।
আমি ছিলাম কারো কাছে সুখের একটা চাবি
আমার কাছে কারো আবার ছিল অনেক দাবি।
চোখের বালি ছিলাম কারো, অশুভ এক সৃষ্টি,
কারো আবার ফিরিয়েছি তার চোখের দৃষ্টি।
আমি যখন এসেছিলাম প্রথম তোমার ঘরে,
আমি ছিলাম তোমার ঘরে ঘরটি আলো করে।
চারিদিকে আলোর মেলা, প্রশংসা সব যত,
আমায় পেয়ে সকল মানুষ খুশি ছিল কত!
বলেছিল সবাই আমায় — ‘সুন্দরী এক বধূ’,
আমার মুখে ঝরত নাকি সুন্দরবনের মধু।
প্রশংসাতে প্রশংসাতে সকাল হত রাত্রি,
বুঝিনি তো হতে হবে মৃত্যুপথযাত্রী।
কোথা থেকে ফুরিয়ে গেল আমার সুখের দিন!
জরা এসে আমার দেহে, হয়েছি যে ক্ষীণ।
মৃত্যুকালে মনে পড়ে কত মধুর স্মৃতি,
চোখের জলে ভাসতে থাকে সেই সকল তিথি।
কত লোকের ধানের গোলা উঠল ধানে ভরে,
আম-কাঁঠালের গন্ধে কত দুঃখ যেত সরে।
কত লোকের জীবনেতে ফুল ফোটালাম কত,
চেয়েছিলাম সুখ শান্তি দিতে অবিরত।
কারো কাছে অজান্তেই ছিলাম অভিশাপ,
মৃত্যুকালে করজোড়ে চাইছি আমি মাফ।
সকল চাওয়া করবে পূরণ আসলে নববধূ
তার মুখেতে ঝরতে দেখবে আমার বেশি মধু।
আদর করে বরণ করে নিও তাকে ঘরে,
নববধূ দেবে সবার মনটা শান্তি করে।
আশা ছিল — ‘মরার আগে দেখব বধূর মুখ,’
শান্তি পাব, যতই আমার হোক না মনে দুখ।
ভালো খারাপ মিশে জানি সব কিছু তো হয়,
তবে কেন আমার জন্য দুঃখ নাহি রয়?
মৃত্যুকালে চাইছি আমি তোমরা ভালো থেকো,
মিলেমিশে সুখ-স্বপ্নের বাসা তৈরি রেখো।

পরে পড়বো
১১
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন