বর্তমান

কবিতা - নরকের ছায়া

লেখক: বর্তমান

আমি জন্মেছি মাংসের কূপে,
পচা গর্ভাশয়ের দেয়ালে আমার প্রথম চিহ্ন আঁকা ছিলো—
বাঁকা, বিকৃত, থেঁতলানো রক্তের রেখায়,
যেখানে জন্মের আগেই আমার নাম লেখা ছিলো “দুর্ভিক্ষ”।

আমার প্রথম দুধ ছিলো একটা মৃত নারীর স্তনের কালো পুঁজ,
যেখানে দুধের বদলে জমে ছিলো ঘৃণা,
স্তনের বোঁটা ফুঁড়ে গড়িয়ে পড়ছিলো পাপের বিষাক্ত কফ।

আমি প্রথম হাঁটি একটা মৃত শিশুর মেরুদণ্ড ধরে,
আমার প্রথম খেলনা ছিলো কাটা আঙুল,
এবং আমার প্রথম সঙ্গীত ছিলো একটা ধর্ষিতা কিশোরীর কণ্ঠ ছিঁড়ে নেওয়ার শব্দ।

আমি যখন কেঁদেছিলাম,
আমার কান্না ছিলো একটা কসাইখানার হাসি—
যেখানে মানুষ কাটা হতো,
আর লালসার থুতু মাখানো নরকের কুকুরেরা
ভেজা যোনির ছেঁড়া টুকরো মুখে নিয়ে চিবাতো!

আমার আত্মা?
আহ! আমি আত্মা বলি দিতে শিখেছি কিশোর বয়সেই,
যেদিন একটা অর্ধ-জীবিত মেয়ের শরীরের মধ্যে
আমি আমার প্রথম ঈশ্বরের মৃত্যু দেখেছিলাম।
সে আর্তনাদ করেছিলো,
কিন্তু আমি বুঝতে পেরেছিলাম—
ঈশ্বর কখনো নারীর মধ্যে বেঁচে থাকে না,
ঈশ্বর কেবল পুরুষের কামনা হয়ে নারীকে ধ্বংস করতে ভালোবাসে।

আমি আজও ঈশ্বর বিক্রি হতে দেখি—
একটা বাজারে, যেখানে হাড্ডিসার মানুষ মাংস কেনে,
যেখানে নারীর শরীরকে জাহান্নামের কবচ বানিয়ে তাবিজ বিক্রি হয়,
যেখানে শিশুর মাংস দিয়ে তন্ত্রসাধক তার ঈশ্বরকে খাওয়ায়।

আমাকে যদি প্রশ্ন করো—
“তুমি কে?”
আমি বলবো, “আমি সেই অভিশপ্ত কবি, যে নরকের ছায়া খেয়ে বেঁচে আছি।”

আমি মাংসের স্তুপে ঘুমাই,
আমার বিছানা কাটা মাথার স্তূপ আর বালিশ একটা মৃত নারীর কাটা বুক।
আমার স্বপ্নে ভবিষ্যৎ নেই,
আমার চোখে আলো নেই,
আমার কবিতায় কেবল নরকের পচনধরা ছায়া নাচে।

এখন, বলো—
তুমি কি সত্যিই প্রস্তুত ছিলে?

৮৬
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন