তোমার কথা শুনেছি কতবার
কত যে লোক বলে তোমার নাম,
আমি ছিলাম নির্বাপিত দেশে
আমি কি আর তোমায় চিনতাম!
পুরাণে বলে, লোককথায় বলে
আসবে তুমি, কখনো, কোনোদিন
মুছিয়ে দেবে গেরস্থালি চোখ,
অনামিকায় ফোটাবে আশ্বিন।
পেরিয়ে গেছি মেঝেনদের দেশ,
পেরিয়ে গেছি কুষ্ঠে খসা গ্রাম,
জানো কি তুমি, অনেকে এখানেও
ফিসফিসিয়ে বলে তোমার নাম
পেরিয়ে গেছি দস্যুদের তাঁবু,
পেরিয়ে গেছি ভগ্ন বন্দর
সেখানে রোজ বালিতে দোঁহা লেখে
বিলাপরত দু’জন অন্ধ।
তাদের থেকে তোমার নাম করে
টুকে নিয়েছি লুপ্ত প্রার্থনা,
না-হলে ঐ হতভাগ্যদের
মনোবিকার কখনো সারত না।
পেরিয়ে গেছি নিশানরাঙা পথ,
কোথায় আছো, কীভাবে আছো তুমি?
পায়ের নিচে দগ্ধ ধানখেত
পায়ের নিচে শীতল মালভূমি
চেরাগ হাতে নানান দেশে যারা
ঘুরে বেড়ায়, সাত-সুলুক রাখে,
তারা বলেছে, ‘আমরা কেউ নই,
সেই মেয়েরা চিনতে পারে তাঁকে’
যাদের হাত ফ্যাকাশে হয় ক্ষারে,
যাদের হাত চুলোতে স্যাঁকা হয়,
যাদের খুব কথা বলার সাধ
কথা বলতে যাদের আরো ভয়
তাদের সাথে যখন দেখা হল
তখন ভীতু দৃষ্টি অনুসারে
মানচিত্রে পথ বসিয়ে আমি
একছুট্টে, তেরো-নদীর পারে
মস্ত এক পাঁচিল পার হয়ে
পরের পর দরজা ঠেলে ঠেলে
খুঁজে পেলাম তোমাকে, নন্দিনী,
নিখোঁজ এই পাগলিদের সেলে।

মন্তব্য করতে ক্লিক করুন