দ্য কিলার আউটসাইডার – ২৭
দ্য কিলার আউটসাইডার – ২৭
যুবক অনার্য

গল্প - দ্য কিলার আউটসাইডার – ২৭

লেখক: যুবক অনার্য
প্রকাশ - মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫ ধরণ: রহস্য

বিদেশের মাটিতে টিটুর সময় কাটে কঠিন ব্যস্ততায়।
দেশ ছেড়ে আসবার কোনো ইচ্ছে তার কখনোই ছিলো না।কিন্তু সে বিদেশে এসেছে দেশের জন্যই।হতভাগা দেশটার জন্য সে কিছু করতে চায়।দেশকে আমূল বদলে ফেলতে চায় সে।অনেক স্বপ্ন অনেক ভালোবাসা দেশের প্রতি তার।কিন্তু তার রাজনৈতিক জীবন জুড়ে আছে খুব জটিল রসায়ণ।জিলমের সাথে এখন এবং বহুদিন ধরেই সম্পর্ক ভালো কিন্তু কখনো এমন সময়ও তো আসতে পারে যে জিলমের সাথে রাজনৈতিক মতাদর্শে তুমুল দ্বন্দ্ব তৈরি হলো আর টিটুকে জিলম ও তার দল থেকে সরে আসতে হলো দেশের স্বার্থেই।হতেও তো পারে।রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই।রাজনীতিবিদরা হলো এমন যে স্বার্থের কারণে সকালে যাকে ঘৃণা করে বিকেলে তাকেই চুমু খায় শুধু স্বার্থের কারণেই।এদের আসলে বুক পিঠ বলে কিছু নেই।কিন্তু এমনতরো রাজনীতি টিটুর সাথে যায় না।রাজনীতির নামে দেশে যা চলছে তা দিয়ে একটা দেশ কখনোই বেশিদূর যেতে পারবে না।তবে এখনো চাইলে দেশটাকে সোনার দেশ বানানো সম্ভব শুধু কয়েকটা দিকে বিশেষ ভাবে জোর দিলে।টিটু বিশ্বাস করে তার রাজনৈতিক জ্ঞান ম্যাচিউরড নয়।তাকে জানতে হবে বুঝতে আর দেখতে হবে আরো অনেক। দেখে জেনে বুঝে শিখতে হবে শিখে শিখে আগাতে হবে।টিটু রাজনীতির কোনো প্রধান পুরুষ নয়,টিটু বস্তুত রাজনীতির মাঠে তেমন কিছুই নয়,বড়োজোর জিলমের একজন কাছের বন্ধু মাত্র।প্রধান পুরুষ বা প্রধানদের একজন হলো জিলম।যে-ভাবনাগুলো টিটু ভাবে সেগুলো আসলে জিলমেরই বেশি ভাবা উচিৎ এবং জিলম এর জন্য লায়াবল।কিন্তু জিলম কি এসব বুঝে নাকি বুঝেও বুঝতে ভালো লাগে না?জিলমের রাজনৈতিক দর্শন এখনো অপরিপক্ক।টিটু জিলমকে আকারে ইঙ্গিতে বিভিন্ন সময়ে বুঝাতে চেষ্টা করেছে রাজনীতির মাঠে কোন কোন বন্ধুকে এড়িয়ে যাওয়া উচিৎ এবং কোন কোন বন্ধু ও নেতাকে প্রায়োরিটি দেয়া জরুরি।কিন্তু টিটু লক্ষ্য করেছে – ওর এসব কথা জিলমের খুব একটা পছন্দ হয় নি কখনো।পাছে জিলম অনধিকারচর্চা ভেবে বসে কিনা তাই টিটু ওসব কথা বলা বাদ দিয়ে দিয়েছিলো শুধু আসার আগে বাল্যবন্ধু ও জিলমের শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে কিছু কথা বলে এসেছিলো।এসব সে বলেছিলো বন্ধুর প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই,এর বেশি কিছু নয় কারণ টিটু জানে ওর ওসব কথা জিলম কখনো পাত্তা দেয় নি আর দিবেও না।তবু ভালোবাসা আর দায়বদ্ধতা টিটু এড়িয়ে যেতে পারে নি।
টিটুর মাঝে মাঝে মনে হয় যারা রাজনীতি করে,করতে চায় প্রত্যেককেই ভিয়েতনামে পাঠিয়ে হো চি মিনের ডেড‌‌বডি দেখিয়ে নিয়ে আসা উচিৎ। একটা মানুষ যখন দেশেপ্রেমিক হয় দেশের মানুষের জন্য কাজ করে তখন জনগণই তাকে চিরদিন এমনকি মৃত্যুর পরেও আগলে রাখতে চায়,ছেড়ে যেতে কিংবা ছেড়ে দিতে চায় না কিছুইতেই। ক্ষমতায় থাকার জন্য সবচেয়ে উৎকৃষ্ট ও সহজ উপায় হলো দেশকে ভালোবাসা দেশের মানুষের পাশে থাকা।আর এই বিষয়টিই ডেভেলপ করতে চায় টিটু।টিটু স্বপ্ন দেখে উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশের রাজনীতিকরাও সততা ও স্বচ্ছতা নিয়ে কাজ করে যাবে দেশের জন্য মানুষের জন্য।এজন্য নিশ্চয়ই প্র‍য়োজন ব্যাপক প্রস্তুতি। এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই টিটু পারি জমিয়েছিলো বিদেশের মাটিতে।

দেশে থাকতেই টিটু একটা পরিবর্তনের গন্ধ পাচ্ছিলো।গন্ধটা হলো ক্ষমতার হাত বদলের।এবং শেষ পর্যন্ত সেটাই হয়েছিলো।দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করতে গিয়ে একটি জাহাজ দুর্ঘটনায় রহিমা বেগমের দলের মাত্র কয়েকজন নেতা ছাড়া জাহাজসহ প্রায় ৬০/৬৫ জন ডুবে মরে যায়।জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ময়দানে বিষয়টি এভাবে ছড়িয়ে যায় যে ওটা ছিল ক্ষমতাসীন দলের ষড়যন্ত্র।ক্ষমতাসীন দল নাকি চেয়েছিলো বিরোধীদলকে একবারে নিশ্চিহ্ন করে দিতে।এ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে প্রচন্ড তোলপাড় শুরু হয়।রহিমা বেগমের দল সরকার পতনের আন্দোলনের ডাক দেয়।দেশি ও বিদেশি প্রচন্ড চাপের মুখে ক্ষমতাসীন দলকে নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই নির্বাচন দিতে হয়।ক্ষমতাসীন দলের ভরাডুবি হয় এবং রহিমা বেগমের দল সরকার গঠন করে।

৪২
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন