এয়ারপোর্ট থেকে ২০০ গজ দক্ষিণ-পশ্চিমে হরেন যেখানে দাঁড়িয়ে আছে আগে ঠিক অইখানেই দুইটি কৃষ্ণচূড়া( নাকি রাধাচূড়া?) গাছ ছিলো।এখন নেই।হরেনের চোখে কালো সানগ্লাস।সে সিগ্রেট ধরিয়ে পায়চারি করছে।অদ্ভুত হলো সে একবারও সিগ্রেটে টান দেয় নি।সে কি কোনো কারণে উত্তেজিত? না,হরেনের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো কোনো কিছুতেই সে চিন্তিত বোধ করে না এবং উত্তেজিতও হয় না।সিগ্রেটে টান না দেয়ার উদ্দেশ্য হলো সে বুঝতে চাইছে তাকে কেউ ফলো করছে কিনা।কেউ ফলো করছে কিনা এটা বুঝার সহজ উপায় হরেন মনে করে মাঝারি ধরনের সুক্ষ্ম কোনো অস্বাভাবিক আচরণ ফুটিয়ে তোলা।আর এরকম করতে পারলেই কেউ ফলো করছে কিনা বুঝা সহজ হয়ে যায়।হরেনের মনে হলো কেউই তাকে ফলো করছে না।কিন্তু হরেনের জানা নেই যে তার মাত্র ২০ গজ দূর থেকেই তাকে ফলো করছিলো একজন মানুষ যিনি খোড়া ভিখিরির ভঙিমায় বসে আছে সামনে ভিক্ষের থালা নিয়ে।ছদ্ম সেই ভিখিরির দায়িত্ব হলো হরেন গন্তব্যে পৌঁছানোর আগে অজিত দাদা ছাড়া অন্য কারো সংগে কোনো যোগাযোগ করে কিনা সেদিকে লক্ষ্য রাখা এবং দৈবাৎ কোনো বিপদে পড়লে হরেনকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করা।১৫ মিনিট পর একটি কালো গাড়ি এসে থামলো হরেন যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলো সেখান থেকে ৩ গজ দূরে।হরেন গাড়ির দিকে এগিয়ে যেতেই দরোজা খুলে গেলো।হরেন গাড়ির ভিতর ঢুকেই মৃদু হেসে অজিতদাকে নমষ্কার জানালো।নমষ্কারের উত্তরে অজিতদা হরেনের দিকে তাকিয়ে সামান্য হেসে গাড়ির বাইরে উদাস ভঙিমায় তাকিয়ে রইলেন।হরেন কিছু বলছে না।অজিতদাও চুপচাপ।গাড়িটি এসে থামলো সেই মিষ্টির দোকানে যেখানে একদা অজিতদার সংগে ছিলো দিলু,সেই দিলু যে ঠাললু এন্ড গং সহ নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছিলো।কিন্তু হরেনের এসব কিছুই জানবার কথা নয়।হরেন জানেও না।অজিতদা মিষ্টি নেবার পর অভ্যাসবশত বললেন- আর কিছু লাগবে?
হরেন বলে- লাগবে
অজিতদা বোধহয় ধাক্কা খেলেন।বললেন- কী লাগবে?
হরেন উত্তর দিলো- মশার কয়েল লাগবে।আজকাল মশাগুলি বড্ড বেড়ে গেছে।
অজিতদা হো হো করে হেসে উঠে বললেন- বড্ড বেড়ে বলেছিস।হো হো হো।

০
০
সেভ বা রিয়েক্ট করার জন্য লগইন করে নিন!
৬৯
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন