থাকেনা কেউই আজ সেখানে,
ঐ পোড়ো রাজবাড়ির পাশে মোর ঘর।
একসময় ওটি ছিল ঝাঁ চকচকে,
আলোয় মোড়া স্বর্ণ সম দিঘীর চর।।
সারাদিন কতো মানুষের আনাগোনা,
লেঠেল ও পেয়াদা দের শোরগোল।
বিচার বৈঠক আসনে বসে রাজা,
করতেন পাপিদের ওল মাটি ঘোল।।
প্রতিটা ক্ষন সর্ব মূহুর্ত,
দেখা যেতো এক ধর্ম পরায়ন রাজার।
সারা গ্রামের গুনি সমাজ,
ওনার রাজত্বে খুশি ছিলেন অপার।।
রাজা ছিলেন বিদ্যা লোভি,
রাজকার্যে নিপুন ও দান কাজে পটু।
প্রজাগন তার পুত্র সমান,
বার্তাই সুদুর প্রচারি- কথা নয়কো কটু।।
রাজার ঘরে রাজশেখর,
বিরাজ করেন স্বর্গ সম মন্দিরে।
সারা রাজ নগর নতশির,
তাঁর স্নিগ্ধ – শিতল শাসন কলাতে।।
মোহোল সভার মন্ত্রী মোহোল,
রাজ রাজত্বের সুচিন্তক বটে।
এভাবেই দিন বয়ে যায়,
সর্বত্রই সুখেই জীবন কাটে।।
হঠাৎ করে দেব সাগরে,
কলুষিতময় ভীষম ফণীর আগমন।
রাজার ঘরের রাজকন্যার,
সবার মাঝে সোহাগ রুপে হবে বরন।।
রাজকন্যের জীবন ধারায়,
নূতন অধ্যায়ের হবে পূর্ণ প্রকাশ।
এখান থেকেই শুরু হবে,
সোনার রাজত্বের বিধি লেখা সর্বনাশ।।
রাজার জামাতা অপরুপ,
সব রাজত্বের রাজপুত্তুর দের চেয়ে।
বাইরেটাই মহা গৌর বর্ণ,
ঘোর কালো পিশাচের বাস-
ঐ দেহের অন্তরে।।
রাজপুত্তুর এক কামে সন্তুষ্ট নয়,
চায় সে কামিনী কাঞ্চন বারংবার।
ভোগ চাহিদা পরিপূর্ণ হলে,
দাসী নিযুক্ত করি ভরে তার গুপ্ত দরবার।।
সে দরবারের তিনিই রাজা,
মন্ত্রী-টন্ত্রী নেই সেই ঘোর গুপ্ত দরবারে।
সোম রসের গন্ধে ভরা চারিদিক,
আতরের বাসে মুগ্ধ দরবার চরাচরে।।
এ দরবার কামিনী দহন,
কাঞ্চন বিলানোর সুবিশাল ক্ষেত।
যার অন্দরে আগমন আছে,
বেরোবার পথ- যখন কেউ হবে প্রেত।।
সারা চরাচরে এসব অজানা,
সে দরবারের কথা জানতা না কেউ।
শুধুই জানত সবে,
রাজপাত্তুর একটু দুষ্টু-
চাই সুলক্ষণা একটি ব‌উ।।
যার স্নিগ্ধ পরশ পেয়ে,
রাজপুত্তুর ঠিক রাজ কাজে দেবে মন।
এ আশা মনে নিয়ে,
আমার রাজার অগ্রে আসে নিমন্ত্রণ।।
রাজা অতিব আনন্দের সাথে,
আগত ও অযাচিত নিমন্ত্রণ করেন স্বীকার।
আনন্দে আপ্লুত তিনি আজ,
মন মাঝে সুমধুর তরঙ্গ ব‌ইছে বারংবার।।
অতি আড়ম্বর করে অনুষ্ঠান,
ধর্মরাজ তাঁর কন্যার করেন পূর্ণ দান।
সারা রাজ্য উৎসবে মুখর,
রাজকন্যা দানের পরে-
রাজার চিত্ত আজ ম্লান।।
কোলে পিঠের ছোট্টো খুকু,
আজ পাড়ি দেবে সুদুর সেই তেপান্তরে।
ঘনো ঘনো চোখে জল,
হৃদয় ভাঙার অনুভূতি-
পিতা রাজার অন্তরে।।
শোকের পাথর বুকে রেখে,
পিতা রাজা বিদায় দিলেন-
জোড় কুসুমেরে।
চোখের জলে গড়ে নদী,
মধুর সুরের সনে বৈঠা টানে মাঝিরে।।
অজানা কালো মেঘের পথে,
প্রথম চলা শুরু মোদের রাজকন্যার।
পদে পদে বিপদ তাকিয়ে,
যেটি অভেদ্য- হাতছানি দেয় বার বার।।

পরে পড়বো
৩৫
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন