ঐ শোনো বাতাসের স্বরে,
নিবিড় ছায়া-তলে—
কে যেন প্রশ্ন করে:
“কী নামে ডাকিলে চলে?”
যে জন হানাদার সনে করিল মিতালী,
স্বদেশ-আত্মারে দিল আঁধারের কালি।
হৃদয়-কমলে তার জন্মিল যে পাপ—
সে তো নহে সাধারণ কোনো অভিশাপ।
তুমি তারে ডেকে নাও কোনো মিথ্যা নামে,
দেহের কলঙ্ক ধুয়ে দাও মিছে দামে।
কহিতে পারো সে এখন “পাপমুক্ত জন”,
কহিতে পারো সে তোমা-সখার স্বজন।
কিন্তু, রে মূঢ় মন— এ কী তব ভুল?
বিষবৃক্ষ কি কভু দেয় মধু ফুল?
“রাজাকার!”— এই ধ্বনি, এ তো নহে শুধু নাম,
এ যে শত আর্তনাদ, এ যে লক্ষ ধাম।
এ তো সেই কলঙ্কের চিহ্ন চিরন্তন,
যেখানে স্বদেশী হাতে হলো বক্ষে হনন।
তাহার মসি-মাখা ইতিহাসে নাহি ভেদ,
নামের আড়ালে রয় একই রুধির-খেদ।
তাই বলি— এসো, যত করো নামান্তর,
হৃদয়ের পাপে নাহি কোনো রূপান্তর।
ললাটের লিখনে যা লহিয়াছে স্থান,
তাহারে মুছিবে কোন মায়াবী বিধান?
ডাকিলে যে নামে, সেই নামে সে রবে—
আসল পরিচয় তো চিরকাল সবে।
ছদ্মবেশে সে রয়, রয় অন্ধকারে—
তবু তার পাপের ভারে দিক কাঁপে বারে বারে।
সে তো রাজাকার— আর অন্য কিছু নয়;
নামের কুহেলি দিয়ে সত্য ঢাকা নাহি হয়।

মন্তব্য করতে ক্লিক করুন