প্রসূন গোস্বামী

কবিতা - রূপসিদের দেশে এক রোদ-চিঠির গল্প

প্রসূন গোস্বামী

তোমার ঠোঁটের কোণের ওই সূক্ষ্ম হাসিটা কি, জানো,
আসলে তা গত রাতের ফিসফিসানি, রোদে শুকিয়ে রাখা?

এই যে আমার চা-কাপের ধোঁয়া,
কুন্ডলী পাকিয়ে মিশে যাচ্ছে শূন্যে—

ওটা তোমারই নিশ্বাসের উষ্ণতা,
এক আলোক-গণিত, বুঝেছ?

রূপসিদের দেশে নাকি মেঘেরা
চিঠি লেখে জলের অক্ষরে।

আর আমি পাই শুধু তোমার ত্বকের রঙে লেখা
এক সূক্ষ্মতম খাম।

সে খামের ভেতর কোনো কালি নেই,
শুধু পুরোনো জানালার গন্ধ,

আর বাতাসের কারসাজিতে
উড়ে আসা দু-একটা প্রেম-ধুলো।

কখনো ভেবেছ, কেন তোমার বুকের বাঁদিকে এতোটা শূন্যতা?
ওটা আমারই দীর্ঘশ্বাসের এক গোপন কক্ষ,
যেখানে নীরবতা গান গায়।

আজকাল রোদও বড় বেহিসেবি,
আমার নাম ধরে ডাকে—

যেন তোমারই এক অদৃশ্য আঙুল
স্পর্শ করে যায় চোখের পাতা।

আমি জানি, তোমার প্রত্যেকটি ঘুমন্ত লোমকূপ জানে,
আমার এই প্রতীক্ষা কোনো সাধারণ অপেক্ষা নয়,
এক ঋতু বদলের খেলা।

তুমি তো দেখনি, তোমার হাসি যখন রোদে গা ধোয়াতে যায়,
অজস্র জলরঙের ঘোড়া ছুটছে আমার মনের দিগন্তে।

আর ওই রুপোলি ছায়াগুলি,
দরজার চৌকাঠ পেরোতে গিয়েও থমকে যায়—

তারা আসলে তোমারই ফেলে যাওয়া
চুম্বনের সিসিটিভি ফুটেজ।

শোনো, সব রোদেরই একটা গোপন ঠিকানা থাকে।

আমার ঠিকানা তোমার পাজরের ঠিক কিনারায়,
যেখানে আলোও দ্বিধা করে নামে!

পরে পড়বো
৬২
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন