শোনো, হে স্বঘোষিত প্রশান্তির অগ্রদূত!
তোমার মুখে ধ্রুব শঙ্খধ্বনি; ওষ্ঠে অক্ষয় শান্তির প্রশস্তি।
অথচ তলে তলে কী অহেতুক রৌরব! কী বিপুল আয়োজন!
আমি তো দেখি, তোমার হস্তযুগল – তা আর ললিত মঙ্গলের ডালি নয়,
তারা প্রত্যহ প্রসব করে কেবলি ধূমায়িত বারুদ, আর নিস্তব্ধ শবের সারি।
কোথা সে মৈত্রী? যে-কথা ছিল তোমার মুখ্য মিনার,
তা আজ কেন কেবলি সন্ত্রাসের তীক্ষ্ণ ফলা শানায়?
তুমি বলো, তুমি সভ্যতার রক্ষক; তুমিই পরিত্রাতা।
কিন্তু প্রত্যুষের রক্তিম আভা আজ কেন শুধু দগ্ধ নগরের অঙ্গার,
আর ভগ্ন জনপদের হাহাকারেই চিত্রিত হয়?
তোমার সেই ‘বাণী’ – সে তো এক দুর্বোধ্য হেঁয়ালি!
বাম হস্তে করো দীক্ষা, দক্ষিণেই করো শিরশ্ছেদ; এ কেমন দ্বৈত লীলা!
ঐশ্বর্যের স্তূপের নিচে চাপা পড়ে রহে শিশুর নিষ্কম্প দেহ;
আর তুমি হাসো; বলো, “এ তো কেবল নূতনের প্রতিষ্ঠা হেতু যজ্ঞ।”
কোন সে নিদান? যার হেতু পুরাতন জরাতুর ধরিত্রীকে,
এমন নির্মম, এমন বিভীষিকাময় উপায়ে পুনর্গঠন করতে হয়?
আমার স্নায়ুতন্ত্রীতে আজ কেবলি এক প্রশ্ন ক্লিষ্ট, তীক্ষ্ণ —
যদি শান্তিই তোমার মূলমন্ত্র হয়, তবে এই বিশ্বজোড়া ধ্বংসের উৎসব কেন?
তোমার জিঘাংসা, তোমার প্রচ্ছন্ন সাম্রাজ্যবাদের সূক্ষ্ম কারুকার্য —
এইটুকুই কি তবে তোমার কথিত ‘শান্তির চরম অভিজ্ঞান’?
আমি ক্লান্ত। এই প্রবঞ্চনার ভারে আমার অস্থিমজ্জা আজ চূর্ণ।
আর কোনোদিনও কি সেই সরল, স্বচ্ছ প্রভাত ফিরবে?
নাকি এই তমসাচ্ছন্ন, মিথ্যার মশাল হাতেই আমাদের আজন্ম প্রদক্ষিণ?

মন্তব্য করতে ক্লিক করুন