আঁখবনে ছায়া নড়ে।মধ্যরাত দুলে ওঠে শীতের বাতাসে। ছায়া নড়ে- এতোরাতে কার ছায়া? কুয়াশায় কাঁপে কার পাপ? দূরে, আকাশের পশ্চিম কিনার ঘেঁষে ক্ষ’য়ে যাওয়া ঠান্ডা চাঁদ, খুবলে উঠায়ে নেয় যেন এক গলা-চোখ, ভিজে, রক্তমাখা।
কার ছায়া নড়ে ওই আধো আলো অন্ধকারে, কুয়াশার ফাঁকে! হাড্ডিসার রোগা ভাঙা গতকালও দুইঘর ছেড়ে গেছে গ্রাম, তেঁতুলের মগডালে গলা বেঁধে ঝুলে আছে খাদেমের বাপ- গেরাম উজাড় প্রায়, বানে ও ক্ষুধার ঘায়ে মরে নাই যারা
রঙিলা শহর শেষে গিলেছে তাদের। তাদের লাশের নামে, তাদের হাড়ের নামে, তাদের রক্তের নামে আজ রাজনীতি জ’মে ওঠে জনসভা, হাততালি, নগরের বিশাল মিছিল… আঁখবনে কার ছায়া? মাঝরাতে অন্ধকারে জোড়া ছায়া নড়ে।
নষ্ট চোখের নাহান রক্তমাখা ভেজা চাঁদ নেমে যায় দূরে- ফরাক রাখেনা ক্ষুধা, একপাতে এনে দেয় কুকুর শিয়াল। হাভাত ক্ষুধায় ক্লান্ত বেঘোরে ঘুমায় বুড়ো ছিদাম নিকেরি, গোলায় মজুদ ধান, মহাজন নিদ্রাহীন, বাড়িতে পাহারা।
দুঃস্বপ্নে জেগে ওঠে ছিদামের চোখ, তার চোখে ছায়া নড়ে, এক নয়, জোড়া নয়, শত শত ছায়া নড়ে- তারা শুধু ছায়া ধানের গোলার পাশে জমা হয় শত ছায়া- তারা শুধু ছায়া তারা এক ছিদামের বুকের ভেতরে জমা আক্রোশের ছায়া।।
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন