আমার জিভে এখনো রয়ে গেছে
এক গুলির উষ্ণ ধ্বনি—
যা চিবিয়ে খেয়েছিলাম সেইদিন,
যেদিন আকাশটাকে টেনে নামিয়ে এনেছিল এক শিশু,
আর তার দুই চোখে জন্মেছিল পতাকা।
লাল?
তা কি রং?
না, তা এক দীর্ঘশ্বাস—
যার ওজন মাপা যায় না কাঁটায় বা ঘড়িতে,
যার শব্দ নাই, তবু
প্রতিটি মাটির ছেঁড়া শিরায় তার হাহাকার বাজে।
স্বাদ?
তা কি জিহ্বার? না আত্মার?
স্বাধীনতার স্বাদ তো চামড়ার নিচে লুকানো
কিছু পচা-রক্তের কবিতা—
যা লেখা হয় না কলমে,
শুধু গলে পড়ে বন্দুকের ফাঁকা ট্রিগারে।
আমি সেই স্বাদ জানি,
যেখানে মা হারানো সন্তানের কান্না
ধীরে ধীরে পরিণত হয় এক রাষ্ট্রীয় ভাষণে।
যেখানে এক বিধবার থালা থেকে
রাতের খাবার নয়,
উঠে আসে একটি প্রশ্ন—
“এই স্বাধীনতা কার?”
আমি সেই লাল চুমে দেখেছি,
যার শিরা ছিন্ন,
যার চোখ পাথর,
যার বুক গহ্বর—
তবুও যার নাম রেখেছি “মাতৃভূমি”,
কারণ মৃতদেহের চেয়েও সম্মানযোগ্য কিছু নেই
এই ভূগোলে।
এভাবে আমি প্রতিদিন স্বাদ পাই—
লাল, লৌহ, লাশ আর লজ্জার এক বিষাক্ত অমৃত,
যা খেতে খেতে আমরা শিখে গেছি
কীভাবে স্বাধীনতা বানাতে হয়
বিস্মৃতি দিয়ে।

৪৮
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন