শাড়ির ভাঁজে লুকিয়ে আছে আশ্বিনের আকাশ,
তারকারা এসে লুকোয় তোমার আঁচলের গোপন কোণে।
চুড়ির টুংটাং শব্দে মনে হয়-
ঢাকের তালে তালে আমার বুকের ভেতর বাজছে পূজারই নতুন সুর।
কপালের লাল টিপ আজ যেন
সূর্যোদয়ের প্রথম রক্তিম চুম্বন,
চোখে কাজলের টানে জেগে ওঠে
আষাঢ়ের কালো মেঘ,
যার ভেতরে লুকোনো ভালোবাসা আমারই নাম ধরে ডাকে।
আঙুলের ফাঁকে মেহেদীর নকশা-
যেন আমার অশ্রুর গোপন লিপি,
অপেক্ষার পাতায় আঁকা শপথ,
যেখানে প্রতিটি রেখা বলে যায়,
তুমি এলে না বলে কেমন করে পূর্ণ হবে উৎসব?
অষ্টমীর অঞ্জলিতে তোমার হাতের কাঁপন
আমার প্রার্থনার সমুদ্রকে ছুঁয়ে দিলো,
আমি যেন দেবতার সামনে নয়,
তোমার চোখের জলে মাথা নত করে রইলাম।
নবমীর ভিড়ের মেলায় হঠাৎ
তোমাকে এদিক-ওদিক ছুটে বেরাতে দেখি-
মনে হয় দিগন্তে ছুটছে হাজারো রঙের প্রজাপতি,
আর আমি ভিড়ের ভেতর দাঁড়িয়ে
শুধু তোমার পায়ের আলতো ধ্বনি শুনি-
শিউলি ফুলের মতো ঝরে পড়ে হৃদয়ের মৌন আঙিনায়।
তুমি যখন চুপিচুপি আমার হাতে হাত রাখো,
আমি অনুভব করি-
প্রতিমার চেয়ে মহিমাময় তুমি,
প্রদীপের আলো ম্লান হয়ে যায় তোমার আঙুলের উষ্ণতায়।
দশমীর বিদায় লগ্নে
ঢাকের শব্দ যেন বুক চিরে ফেলে আমার,
আমি তখন ছন্দ ছত্র হই!
বিদায় নিতে শিখিনি এখনো,
শুধু বলতে চাই-
আবার কবে আসবে তুমি?
এইবার পূজা আর দেবালয়ে সীমাবদ্ধ নয়,
এইবার পূজা আমার শ্বাসের প্রতিটি উচ্চারণে,
এইবার পূজা আমার চোখের প্রতিটি অশ্রুতে,
যেখানে তুমি আছো দেবী হয়ে-
শাড়ি, চুড়ি, টিপ, মেহেদী, কাজল, আর অপেক্ষার অনন্ত মুগ্ধতায়।
কারণ এবারের পূজা মানেই-
তুমি এসে দাঁড়িয়েছো আমার ভেতরের প্রতিমার সামনে,
এবার পূজা মানেই-
আমার সমস্ত হৃদয় হয়ে গেছে তোমারই চরণপদ্ম।

পরে পড়বো
৯৪
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন