যা যায় তা আর ফিরে আসে না কখনো
ঠিক আগেকার মতো। পাখির ডানার
শব্দে সচকিত
সকালবেলার মতো আমার শৈশব
প্রত্যাবর্তনের দিকে ফেরাবে না মুখ
কস্মিনকালেও।
বাকদেওয়া মোরগের ধনুকের ছিলার মতোন
গ্রীবা, চৌবাচ্চায় একজোড়া সীমাবদ্ধ
হাঁসের সাঁতার, ভোরবেলাকার শিউলির ঘ্রাণ,
গ্রীষ্মের বিকেলে স্নিগ্ধ কুলপি বরফ,
মেরুন রঙের খাতাময় জলছবি,
সন্ধ্যার গলির মোড়ে কাঁধে মইবওয়া বাতিঅলা,
হার্নি সাহেবের হল্দে পুরোনো দালান,
খড়বিচালির গন্ধভরা মশা-গুঞ্জরিত
বিমর্ষ ঘোড়ার আস্তাবল, মেরাসীনদের গান
ধরে আছে সময়ের সুদূর তরঙ্গেমেশা আমার শৈশব।
মনে পড়ে, যখন ছিলাম ছোট, ঈদে
সদ্যকেনা জামাজুতো পরে
সালাম করার পর আমার প্রসন্ন হাত থেকে
স্বপ্নের ফলের মতো একটি আধুলি কিম্বা সিকি
ঝরে যেত ঝলমলে ঝনৎকারে আমার উন্মুখ
আনন্দিত হাতে।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সেই পাট চুকে গেছে কবে।
এখন নিজেই আমি ছোটদের দিই ঈদী বর্ষীয়ান হাতে,
আয়নায় তাকিয়ে দেখি আপনকার কাঁচপাকা চুল,
ত্বকের কুঞ্চন।
এই ঈদে জননীকে করলাম সালাম যখন,
অনেক বছর পরে আম্মা কী খেয়ালে অকস্মাৎ
দিলেন আমার হাতে দশ টাকার একটি নোট,
স্বপ্নে দেখা পাখির পালক যেন, আর
তক্ষুণি এল সে ফিরে অমল শৈশব
আমার বিস্মিত চোখে কুয়াশা ছড়িয়ে।
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন