যেদিন সে এসেছিল
সেদিন বসন্ত বিস্তার করেছিল
তার বহুবর্ণ কলাপ
আমি তার আগের মুহূর্ত অবধি ছিলাম
আঘাতে পর্যুদস্ত পরাহত
বাসন্তী প্রতিমার কোথায় কোথায়
তখনও ধ্বংসের ক্ষত চিহ্ন দেখা যাচ্ছে
তা দেখার মতো আমার মন ছিল না
কতগুলি ভুল কতরকম ত্রুটি নিয়েই যে বসন্ত আসে এমনকি প্রেমও যে কখনো নিখুঁত হয় না
তা আমি সেদিন দেখতে পাইনি
অথবা কি বলব
তা আমি দেখতে চাইনি ?
সুন্দরের বিছানো আঁচলে
একটা সন্ধিপত্র ঢাকা থাকে
সব ভুল ত্রুটি
ভালোবাসার মার্জনায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় –
আমি সেদিন সন্ধিপত্রে সই করেছিলাম
তারপর ঋতুর পর ঋতু বদলে যায়
ভালবাসার মুখ থেকে
বসন্তের বহুবর্ণ মায়া একটু একটু করে মুছে যায়
তারপর প্রেম সহমরণে যায় চিরনিদাঘের দহনে
সহিষ্ণুতার অঞ্জন ছায়া নিঃশেষ হয়ে যায় সে দহনে
পরাভবের বেদনা থেকে রক্ত মোচন হতেই থাকে
হতাশ্বাস বাতাস এখন আমাকে বলতে থাকে
এবারে ওই সন্ধিপত্র থেকে
তোমার স্বাক্ষর প্রত্যাহার করো –
আমি বলি
ওই সন্ধিপত্রের মধ্যেই যে
সুন্দরের উপর আমার বিশ্বাসের
শিহরণ রয়ে গেছে
সব ক্ষতির মধ্যেও সুন্দর জেগে থাকতে পারে
ওই সন্ধিপত্রই তো আমাকে বলে দেয়.
~ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (কাব্যগ্রন্থ, স্বেচ্ছাবন্দি আশার কুহকে)
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন